
আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে মুসলিম পরিবারগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এই পবিত্র দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো পশু কোরবানি, যা সামর্থ্যবান প্রতিটি নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। তবে, আমাদের দেশে প্রচলিত একটি ধারা হলো কোরবানির পশুর সঙ্গেই সন্তানের আকিকা আদায় করা। কিন্তু ইসলামের বিধান অনুযায়ী, কোরবানির পশুতে আকিকার অংশ রাখা কতটা যুক্তিযুক্ত?
ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। কোনো কারণে সপ্তম দিনে আকিকা করা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে যেকোনো সময়ে তা আদায় করা যায়। এই ক্ষেত্রে, কোরবানির ঈদের দিন কোরবানির পশুর সঙ্গে শিশুর আকিকা করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, কোরবানি যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে একটি ইবাদত, আকিকাও তেমনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গীকৃত একটি আমল। তাই কোরবানির পশুতে আকিকার শরিক রাখতে কোনো বাধা নেই।
ইবনে আবু শাইবা (রহঃ) ‘আল-মুসান্নাফ’ গ্রন্থে (৫/৫৩৪) হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, “কেউ যদি ছেলের পক্ষ থেকে কোরবানি করে তাহলে সেটা আকিকা হিসেবে যথেষ্ট হবে।” একই কথা হিশাম ও ইবনে সিরিন (রহঃ) থেকেও বর্ণিত আছে।
বিশেষ করে উট বা গরুর মতো বড় পশুতে, যা সাধারণত সাতটি অংশে কোরবানি করা যায়, তাতে চারটি কোরবানির অংশ থাকলে বাকি দুই বা তিনটি অংশে আকিকা দেওয়া যেতে পারে। কোরবানির শরিকানার মতোই একই পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হয়ে আকিকা আদায় করতে পারবেন। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬)
‘ইলাউস সুনান’ গ্রন্থে (১৭/১২৬) থেকে বর্ণনা করা হয়েছে, কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হওয়া যাবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই আদায় হবে। ছেলের জন্য দুই অংশ এবং মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে।