অসুস্থ হওয়ার দীর্ঘ ৪৭ দিন পর অবশেষে সুস্থ হয়ে জনসম্মুখে এসেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি ঢাকা-১০ আসনের কাফরুল দক্ষিণ থানায় আয়োজিত একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন।
জনসম্মুখে এসে ডা. শফিকুর রহমান প্রথমেই মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় পর মিডিয়ার সামনে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। এজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা আদায় করছি।'
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ তৌফিক না দিলে আমি আজ এখানে এসে কথা বলতে পারতাম না। এই সময়টা আমার মনে হয়েছে জাতিকে কিছু বলার দায়িত্ব আমার। আমার দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করার আর সুযোগ নেই। তাই আমি আল্লাহর দরবারে তৌফিক কামনা করেছিলাম—যেন অন্তত সেই কথাগুলো বলতে পারি, যা মানুষের কল্যাণের জন্য জরুরি। আল্লাহ সেই সুযোগ দিয়েছেন।
নিজের অসুস্থতার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি জানান, যখন তিনি মঞ্চে পড়ে যান, তখন ইউনাইটেড হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মমিনুজ্জামান টিভিতে দৃশ্যটি দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে তার সমস্যা মস্তিষ্কে নয়, বরং হৃদযন্ত্রে হতে পারে। তার পরামর্শেই পরবর্তীতে চিকিৎসা শুরু হয়।
ডা. শফিকুর রহমান জানান, তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে ২২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়। তারা হৃদযন্ত্রে ব্লক শনাক্ত করেন এবং ঝুঁকি বিবেচনায় তাকে দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
চিকিৎসকদের এই পরামর্শের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, 'চিকিৎসকরা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক কিংবা আমেরিকার মতো দেশের নাম বলেছিলেন। আমি তাদের আন্তরিক পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞ। তবে আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ কি কেবল সেই দেশগুলোতেই আছেন?
চিকিৎসকরা বললেন, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। তখন আমি বললাম, আল্লাহ যদি সেখানে সুস্থ করতে পারেন, তাহলে তিনি চাইলে আমার জন্মভূমি বাংলাদেশেও আমাকে সুস্থ করতে পারেন।'
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, সুস্থতা ও অসুস্থতা আল্লাহর হাতে। তার দৃঢ় বিশ্বাস, আল্লাহই তাকে আবারও জনসম্মুখে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছেন।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, 'আল্লাহ তৌফিক না দিলে আমি আজ এখানে এসে কথা বলতে পারতাম না। এই সময়টা আমার মনে হয়েছে জাতিকে কিছু বলার দায়িত্ব আমার। আমার দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করার আর সুযোগ নেই। তাই আমি আল্লাহর দরবারে তৌফিক কামনা করেছিলাম যেন অন্তত সেই কথাগুলো বলতে পারি, যা মানুষের কল্যাণের জন্য জরুরি। আল্লাহ সেই সুযোগ দিয়েছেন।'
এদিকে দীর্ঘ ৪৭ দিন পর জনসম্মুখে ফিরে আসায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে দলের শীর্ষ নেতাকে প্রকাশ্যে দেখতে পাওয়া কর্মী ও সমর্থকদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বলে মনে করছেন জামায়াত নেতারা।
এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীতে নিজ দলের মহাসমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জামায়াত আমির। বক্তব্যের এক পর্যায়ে হঠাৎ মঞ্চে পড়ে গেলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে ধরে বসান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে চাইলে আবারও পড়ে যান, পরে মঞ্চে বসেই বক্তব্য চালিয়ে যান। সমাবেশ শেষে দ্রুত তাকে ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকরা তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ডা. শফিকুর রহমানের রক্তচাপ, গ্লুকোজ ও হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। মস্তিষ্কে কোনো জটিলতাও ধরা পড়েনি। সতর্কতার অংশ হিসেবে তাকে সেদিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC