
সম্প্রতি ৪৪তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), যাতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ হাজার ৬৯০ জন। এবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) থেকে বিভিন্ন ক্যাডারে ৬ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
তন্মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে দুইজন,শিক্ষা ক্যাডারে তিনজন এবং কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারে ইন্সট্রাক্টর (নন-টেক/ফিজিক্স) পদে একজন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ৪৪তম বিসিএসে কুবিয়ানদের এমন সাফল্যে আনন্দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
এবার ৪৪তম বিসিএসে কুবিয়ানদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১০ম ব্যাচের মো. আশরাফুল ইসলাম সৌরভ এবং ফার্মেসি বিভাগের নবম ব্যাচের এস এম আব্দুলাহ শুভ। শিক্ষা ক্যাডার পেয়েছেন ইংরেজি বিভাগের ৫ম ব্যাচের শরিফুল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বায়জিদ বিশ্বাস এবং গনিত বিভাগের ৯ম ব্যাচের ওলি আহমেদ রায়হান।
এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারে ইন্সট্রাক্টর (নন টেক/পদার্থ) পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৮ম ব্যাচের সঞ্জিব দত্ত। এর আগে ৪১তম বিসিএসেও শিক্ষা ক্যাডার পেয়েছিলেন গনিত বিভাগের ওলি আহমেদ রায়হান এবং ৪৩ তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডার পেয়েছিলেন ইংরেজি বিভাগের মো. আশরাফুল ইসলাম সৌরভ। তবে সৌরভ প্রবল ইচ্ছে ছিল প্রশাসন ক্যাডার পাওয়া,সেই তীব্র আকাঙ্খা থেকেই ৪৪তম বিসিএসে তিনি প্রশাসন ক্যাডার পেয়েছেন।
শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া শরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন রাইজিং কুমিল্লা’র প্রতিনিধি। তিনি বলেন,”এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল। ম্যাথে ভাল ছিলাম না বলে নবম শ্রেণিতে যখন মানবিক বিভাগে ভর্তি হই, তখন বাবা বলেছিলেন তুমি ইংরেজিতে অনার্স করে বিসিএস ক্যাডার হবে। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণের পথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে অনার্সে ভর্তি হয়ে বিসিএসের জন্য চেষ্টা করতে লাগলাম। আমি আমার সাবজেক্ট খুব ভালবাসতাম এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল ইংরেজি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য। এই প্রচেষ্টার ফলেই হয়তো সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহে শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। প্রথম হওয়ার অনুভূতি রোমাঞ্চকর, এটা সব সময়ই স্পেশাল। ভেবেছিলাম ভাগ্যে থাকলে কিছু একটা হতে পারে, তবে প্রথম হবো কল্পনা করিনি কখনো। অন্য জবে থাকার কারণে প্রস্তুতি তেমন গুছিয়ে নিতে পারিনি কখনো, তবে প্রচুর ইংরেজি পড়তাম, সেটাই কাজে দিয়েছে দিনশেষে, আলহামদুলিল্লাহ।”
প্রশাসন ক্যাডার সুপারিশ পাওয়া মো. আশরাফুল ইসলাম সৌরভ বলেন,”মহান আল্লাহর অশেষ রহমত, সবার দোয়া, ভালবাসা ও সহযোগিতায় এবং সর্বোপরি আমার কৌশলী পড়াশোনার কারণে আজ আমি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমার বাবা-মা সবসময় আমাকে উৎসাহ-সাহস জুগিয়েছেন। তাদের সারাজীবনের কষ্ট ও ত্যাগ-তিতিক্ষা আমার আজকের এই সফলতার পথে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছে। এর সঙ্গে আমার বড় ভাই,বোনেরা বিশেষ করে মেঝো বোন সবসময় ছায়ার মতো আমার পাশে ছিলেন। আর একজনের অবদান ছিল প্রতিটা মুহূর্তে,সে আমার সহধর্মিণী। মাত্র অনার্স ২য় বর্ষে পড়ুয়া অবস্থায় আমাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। এরপর বেকার একটি ছেলের পাশে প্রতিটি সময়ে পাশে থেকেছে, সাহস জুগিয়েছে, ভরসা জাগিয়েছে। এছাড়া আমার শ্বশুর, শাশুড়ি, শিক্ষকবৃন্দ ও বন্ধু-বান্ধব প্রত্যেকে তাদের জায়গা থেকে পাশে থেকেছেন। এই মানুষগুলোর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।”