
কুমিল্লার হোমনায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে চারটি মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ২,২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে হোমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আজ শুক্রবার সকালে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোমনার আসাদপুর এলাকার বাসিন্দা মহসিন নামের এক যুবক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ইসলাম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন একটি পোস্ট দেন। এই ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা মহসিনের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই দিনই দুপুরে পুলিশ মহসিনকে আটক করে। একই রাতে ইসলামী যুব সেনার হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম মহসিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মহসিনের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন দেয়। একইসঙ্গে কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পরই পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
বর্তমানে আসাদপুর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে এলাকা অনেকটাই পুরুষশূন্য। পুড়িয়ে দেওয়া মাজারের সামনে মহসিনের মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “ছেলেকে তো পুলিশের হাতে তুলে দিলাম। এরপরও আমাদের মাজার ও বাড়িঘরে কেন আগুন দেওয়া হলো? পুলিশ কোনো নিরাপত্তা দিতে পারলো না কেন? এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়েছি। টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কোনো মালামাল রক্ষা করতে পারিনি। কোনোমতে জীবনটা রক্ষা করেছি।”