মে ১৪, ২০২৫

বুধবার ১৪ মে, ২০২৫

স্বপ্ন থেমে থাকেনি: সামাজিক সংগঠন ইচ্ছার সহায়তায় জাবিতে ভর্তির সুযোগ পেল ৬ শিক্ষার্থী

স্বপ্ন থেমে থাকেনি: সামাজিক সংগঠন ইচ্ছার সহায়তায় জাবিতে ভর্তির সুযোগ পেল ৬ শিক্ষার্থী
স্বপ্ন থেমে থাকেনি: সামাজিক সংগঠন ইচ্ছার সহায়তায় জাবিতে ভর্তির সুযোগ পেল ৬ শিক্ষার্থী/ছবি: রাইজিং কুমিল্লা

আর্থিক সংকটে পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষে (৫৪ ব্যাচ) চান্সপ্রাপ্ত ৬ শিক্ষার্থীর ভর্তিতে দেখা দিয়েছিল অনিশ্চয়তা। এই ছয় শিক্ষার্থী আর্থিক সহযোগিতা পেতে জাবির সামাজিক সংগঠন (Inspire Care & Cultivate Human Aid – ICCHA) ইচ্ছার সাথে যোগাযোগ করেছিল।

ইচ্ছা প্রতিবছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে যাদের আর্থিক সমস্যা থাকে, তাঁদের ভর্তি ফি’র সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করে সহযোগিতা করে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষে আবেদনকৃত ছয় শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি’র সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করে সহযোগিতা করেছে ইচ্ছা। প্রথম মেধা তালিকা হতে ৫ জন ও ২য় মেধা তালিকা হতে ১ জনকে ভর্তি হতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

এসকল শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ জন লোক প্রশাসন, ১ জন ভূগোল ও পরিবেশ, ১ জন বাংলা বিভাগ, ১ জন প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এবং আরেক জন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর একটা বড় সমস্যা ভর্তির ১৫০০০ টাকা এককালীন দেওয়া আমার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে যায়।

তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন (Inspire Care & Cultivate Human Aid – ICCHA) সম্পর্কে জানতে পারি। তাঁদের সাথে যোগাযোগ করার পরেই খুব দ্রুততার সাথে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে অনলাইন ভর্তির প্রথম দিনেই তাঁরা নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। ধন্যবাদ পুরো ইচ্ছা টিমকে, তাঁদের এই কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে দেশ ও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হোক।”

ইচ্ছা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নুরুজ্জামান শুভ বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও কোন শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটের কারণে যেন ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, সেটি নিশ্চিত করতেই প্রতিবছর ইচ্ছা কাজ করছে।

আর্থিক সংকটে থাকা শিক্ষার্থীর নিউজ ভাইরাল হওয়ার পূর্বেই ইচ্ছা তাঁদের নিকট পৌঁছে যাচ্ছে। ভর্তির পরবর্তী সময়ে এসব শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের বৃত্তি ও টিউশন ম্যানেজ করে দিতে ইচ্ছা সহযোগিতা করে থাকে। ইচ্ছা কে যেসকল শুভাকাঙ্ক্ষী সহযোগিতা করে থাকেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

ইচ্ছা’র বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জানান, “খুবই ভালো লাগছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে পেরে। আর্থিক সমস্যার কারণে কোন মেধাবী শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।

ভবিষ্যতে আমাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। ধন্যবাদ যারা আমাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন। আশা করি আমরা এভাবে কারো না কারো স্বপ্নপূরণে সহযোগী হতে পারবো (ইনশাআল্লাহ)।”

ইচ্ছা’র (২০২৪-২৫) সেশনে ভর্তির টিম লিডার কামরুজ্জামান বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যেন একটি স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে হাতের নাগালে পেয়েও যদি ছুটে যায়, এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে? জাবিতে ৫৪ ব্যাচে ভর্তিচ্ছু এমনই ৬ জনের স্বপ্ন যখন ছুটে যাচ্ছিল, তখন তাঁদের পাশে দাঁড়ায় সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা।”

তিনি আরো বলেন, “ঐ ৬ জন শিক্ষার্থী জাবিতে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে পারছিল না। এমন সময় তাঁরা ইচ্ছা’র সাথে যোগাযোগ করে। ইচ্ছা’র টিম জাবির প্রাক্তন সিনিয়রদের সহযোগিতায় তাঁদের ভর্তি নিশ্চিত করে। তাঁদের জন্য সামান্য কিছু করতে পেরে আমরা গর্বিত। একটি স্বপ্নও যেন ঝড়ে না পড়ে।”

উল্লেখ্য যে, “সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা ৫১ ব্যাচ থেকে ৫৪ ব্যাচ পর্যন্ত আর্থিক সংকটে থাকা ১৬ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেছে। এছাড়াও ইচ্ছা ক্যাম্পাসে (শহিদ আজাদ-রুমী গ্রন্থাগার, টিএসসি, জাবি) পরিচালনা সহ নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।”

আরও পড়ুন