মে ৩, ২০২৫

শনিবার ৩ মে, ২০২৫

সহায়তা না পেয়ে ক্যান্সারে মারা গেলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

সহায়তা না পেয়ে ক্যান্সারে মারা গেলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর
সহায়তা না পেয়ে ক্যান্সারে মারা গেলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমি (সেশন ২০১৯-২০)। পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

জিমির বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার গজারিয়া গ্রামে। চিকিৎসার খরচ বহন করা তার পরিবারের পক্ষে ক্রমেই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বরাবর ছাত্রকল্যাণ ফান্ড থেকে আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন জিমি।

আবেদনে জিমি লেখেন, “আমি দীর্ঘদিন যাবৎ পাকস্থলী ক্যান্সারে আক্রান্ত। ইতোমধ্যে চিকিৎসার জন্য ১০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। সামনে আরও চিকিৎসা প্রয়োজন, যা আমার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। আপনার সহানুভূতিশীল দৃষ্টি ও আর্থিক সহযোগিতা আমার জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে।”

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্যের দপ্তরে তিনবার আবেদন জমা দিলেও পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো উত্তর পাননি জিমি বা তার সহপাঠীরা। বরং প্রতিবারই দপ্তর থেকে বলা হয় “আবেদনটি হারিয়ে গেছে”, আবার জমা দিতে হবে। সর্বশেষ ১৫ দিন আগে আবারও আবেদন করা হয়।

এ বিষয়ে জিমির সহপাঠী রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রতিবার যেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে, কোনো পজিটিভ রেসপন্স পাইনি। আজ আর কোনো উত্তরের দরকার নেই, জিমি এখন আর আমাদের মাঝে নেই। বিশ্ববিদ্যালয় যদি বিপদের সময় পাশে না দাঁড়ায়, তবে তাদের দিয়ে আমাদের লাভ কি?”

জিমির মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (২ মে) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্লিপ্ততার প্রতিবাদ জানায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে তাকে সাহায্য করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর সাহায্যের আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা শহিদুল ইসলাম শাহেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জিমি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কতটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।”

আরও পড়ুন