জুন ২০, ২০২৫

শুক্রবার ২০ জুন, ২০২৫

শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বেরোবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

Rising Cumilla -Demonstration in Berobi to protest teacher Mahmudul Haque's arrest
ছবি: প্রতিনিধি

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হককে ‘মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে এ কর্মসূচী পালন করে তারা।

এসময় মাহমুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৩ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। বাকি দাবিগুলো হলো, ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই মিথ্যা মামলার পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা এবং তদন্ত রিপোর্ট পেশ না করার আগ পর্যন্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করা।

সমাবেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার সোহাগ বলেন, আমার শিক্ষক মাহমুদুল হক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য, ডেইলি স্টারের একজন প্রবীণ সাংবাদিক, ইউএনবি’র সাবেক সাব-এডিটর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অন্যতম মেধাবী শিক্ষার্থী। এমন সম্মানিত একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জেলে ভরে রাখা খুব ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

তিনি বলেন, এক প্রহসন ও হয়রানিমূলক মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অতঃপর, কাল বিলম্ব না করে তাকে সরাসরি আদালতে নেওয়া হয় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে ৫ আগস্টের পর ৩য় বারের মতো জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন মামলায় তাকে এজাহারভুক্ত করা হলো যেগুলোর সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আবু সাঈদ ভাই শহিদ হওয়ার পর তিনিই প্রথম শিক্ষক হিসেবে এই পুলিশি হত্যাকাণ্ডের বিচার চান। এছাড়াও পুলিশের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পুলিশকে না দেওয়ার দাবি তোলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো পুলিশই চক্রান্ত করে তাকে গ্রেফতার করেছেন। তাকে দ্রুত মুক্তি না দিলে আমরা হাজিরহাট থানা ঘেরাও করতে বাধ্য হবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: ইউসুফ বলেন, মাহমুদুল হক একজন বিবেকবান ও ন্যায়পরায়ণ শিক্ষক। তিনি শিক্ষক সমাজ ও সমাজের নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় তাঁকে টার্গেট করে হয়রানি করা হচ্ছে। এ গ্রেফতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ।

মাহমুদুল হকের সহধর্মিনী মাসুবা হাসান মুন বলেন, কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমার স্বামীকে পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছেন। এমনকি কথা বললে তাকে জঘন্যভাবে অপমান করার হুমকি দিয়েছেন। পুলিশের এমন আচরণই প্রমাণ করে মিথ্যা মামলায় আটক করার এই ঘটনাটি পুরোটাই সুপরিকল্পিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেই একটা কুচক্রী মহল এটা করেছেন। এই কুচক্রী মহলকে শনাক্ত করতে প্রশাসনের কাছে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জুন বিকেলে রংপুর মহানগরীর ধাপ এলাকার নিজ বাসা থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহমুদুল হককে গ্রেফতার করে হাজিরহাট থানা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, যা তাঁর পরিবার ও সহকর্মীরা ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করছেন।

আরও পড়ুন