
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক কৃষক রাতের আঁধারে দেশীয় অস্ত্রের মুখে তার পাকা ধান লুটপাটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, বাধা দিতে গেলে ভুক্তভোগীর ছেলেকে মারধর করা হয়েছে এবং তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (৫ মে) রাতে উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের রোয়াই পাড়ায়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ও জমির মালিক মো. আবুল কাসেম বাদী হয়ে স্থানীয় মো. ওসমানকে প্রধান আসামি করে আরও সাতজনের নাম উল্লেখ করে বাঁশখালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহারে আবুল কাসেম উল্লেখ করেছেন, অভিযুক্ত মো. ওসমান গত কয়েক মাস ধরে তাকে ধান চাষে বাধা দিয়ে আসছিলেন। এর জের ধরে গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি বাঁশখালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ওসমানকে সতর্ক করে এবং ওই জমিতে পুনরায় না যাওয়ার জন্য নিষেধ করে। তবে, গত ২৮ এপ্রিল ওসমান হঠাৎ জমিতে এসে ধান কেটে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর গত রোববার রাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দলবলসহ এসে তার জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়।
এসময় ভুক্তভোগীর ছেলে বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করা হয় এবং তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা লুট করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে লুট করা পাকা ধান উদ্ধার করে। তবে, আসামিরা পুলিশের আসার আগেই পালিয়ে যান।
বাঁশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোরাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে কেটে নেওয়া ধানগুলো উদ্ধার করে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অর্ধেক ধান চাষীকে ফেরত দেওয়া হয়েছে এবং বাকি অর্ধেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে।”
ভুক্তভোগীর ভাতিজা ও আইনজীবী নুরুল্লাহ আল হেলাল অভিযোগ করে বলেন, “অভিযুক্ত ওসমান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে এসে রাতের আঁধারে আমাদের মারধর করে জমির পাকা ধান লুট করে নিয়ে গেছে এবং পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সে একজন ভূমিদস্যু এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এমনকি ৫ আগস্টের একটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে।”
তবে, অভিযুক্ত মো. ওসমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, “ওই জমিটি আসলে আমাদের। তারাই উল্টো আমাদের জমির ধান নিয়ে গেছে। মূলত ওই জমির মালিক আমরা এবং প্রতিপক্ষ দু’জনকেই জমিটি বিক্রি করেছিলেন। আমাদের নামে বিএস খতিয়ানও রয়েছে। আর মারধরের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে থানায় বসে উভয় পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করার কথা ছিল।”
বাঁশখালী থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, “আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরই ধান উদ্ধার করে চাষী ও ইউপি সদস্যের জিম্মায় দিয়েছি। উভয় পক্ষ থানায় এসেছিল। আমরা তাদের স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি।”