মে ৬, ২০২৫

মঙ্গলবার ৬ মে, ২০২৫

“যে ভিসিকে পাই না, সেই ভিসিকে চাই না”—ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ববি

“যে ভিসিকে পাই না, সেই ভিসিকে চাই না”—ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ববি
“যে ভিসিকে পাই না, সেই ভিসিকে চাই না”—ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ববি/ছবি: প্রতিনিধি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। অবস্থান কর্মসূচি থেকে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে পদত্যাগের ১২ ঘন্টার আল্টিমেটাম বেঁধে দেন। এর মধ্য পদত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশাসনিকভাবে শাটডাউন করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সোমবার (৫ ই মে) বেলা ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ডফ্লোরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। অবস্থান কর্মসূচির পর বেলা ১ টার দিকে গ্রাউন্ডফ্লোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।

ভিসি বাংলোর সামনে দিয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গ্রাউন্ডফ্লোরে এসে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা “যে ভিসিকে পায় না, সেই ভিসিকে চায় না। শুচিতার পদত্যাগ করতে হবে। যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে, সেই উপাচার্যকে চায় না। যে ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে না, সেই ভিসিকে চায় না প্রভৃতি প্রতিবাদী স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গতকাল রোববার ১১ টায় কিছুক্ষণের জন্য ক্যাম্পাসে আসলেও তিনি কিছুক্ষণ পরই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, এই উপাচার্যের আসলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার মতো দক্ষতা নেই।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক রাকিব আহমেদ বলেন, এই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে একদমই ধারণ করেন না। তিনি এই আটমাসে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে তুলেছেন।

তিনি কোন নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা করেন না। এই উপাচার্য সেদিনই তার পদে থাকার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে যেদিন তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আমরা চায় অতিদ্রুত তিনি পদত্যাগ করে স্বসম্মানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিবেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, আগামীকাল বেলা ১১ টার মধ্য উপাচার্য যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শাটডাউন করে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যাণের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সকল একাডেমিক জরুরি প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়েছি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন কিন্তু যারা এই উপাচার্যের দালালি করবে তাদেরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।

আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, স্বৈরচারী মনোভাবের এই উপাচার্যকে অতিদ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। উপাচার্যের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা দেন।

আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি জনদুর্ভোগ ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে। কিন্তু উপাচার্য যদি আগামীকাল সকাল ১১টার মধ্য পদত্যাগ না করেন তাহলে আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না। কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে আমরা বাধ্য হব।

জুলাই আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক ও বরিশাল মহানগরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন “ এই ভিসি শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, আমরা ইউজিসিকে আহ্বান করছি অবিলম্বে এই অযোগ্য ভিসিকে অপসারণ করতে হবে। এবং একজন সৎ ও যোগ্য ভিসিকে নিয়োগ দিতে হবে।”

উল্লেখ্যা, তৃতীয় বারের মতো গত ১৯ দিন যাবৎ উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। এর মধ্য একদিনও আন্দোলনকারীদের সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি উপাচার্য।

উল্টো আন্দোলন দমনে করেছেন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ও জিডি। আন্দোলনকারীরা ফুঁসে উঠে গতকাল রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে একদফা ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন