ভর্তি পরীক্ষার মৌসুম প্রায় শেষ। দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাভিত্তিক ভর্তি কার্যক্রম চলমান। তবে দেশের অনেক মেধাবী ও স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীর জন্য এই সময়টা শুধুই আনন্দ নয়; বিপুল খরচ, আবাসন সমস্যা ও যাতায়াতের ঝক্কিতে তারা হতাশায় ভুগছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এমনি এক মেধাবী শিক্ষার্থী অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা ও পারিবারিক প্রতিকূলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েন। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেও ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় অনিশ্চয়তায় পড়ে যান। ঠিক এমনই এক সংকটময় মুহূর্তে সেই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর পাশে আশার আলো হয়ে পাশে দাঁড়ালেন জাবির এক ছাত্রদল নেতা।
প্রথমে বগুড়া জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্যোগ নেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন হাবিব হিরনকে বিষয়টি জানান। তিনি সেই শিক্ষার্থীর ভর্তির সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় ওই শিক্ষার্থীর সংকটের কথা জানতে পারেন হিরন। এরপর তিনি বগুড়া জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সহায়তায় যোগাযোগ করেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। শুধু আশ্বাসই নয়, তিনি ভর্তি ফি সহ আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় খরচ তুলে দেন এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও সহযোগিতা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই শিক্ষার্থী জানান, "ছাত্রদল নেতা হিরন ভাই পাশে না দাঁড়ালে হয়তো আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন আর বাস্তব হতো না। এজন্য আমি তার প্রতি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ও বগুড়া জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির প্রতি কৃতজ্ঞ।"
ছাত্রদল নেতা হিরন বলেন, "দেশনায়ক তারেক রহমান আমাদের প্রেরণার উৎস। তিনি বিভিন্ন জেলায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।"
বগুড়া জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির দপ্তর সম্পাদক সোহাগ আহমেদ জানান, "এই শিক্ষার্থীর বিষয়টি আমি আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওমর আল ফারুক পরাগের মাধ্যমে জানতে পারি। এরপর আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করি। পরে হিরন ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাথে সাথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। হিরন ভাইয়ের মতো নেতাদের জন্যই অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা ভরসা খুঁজে পায়। জেলা সমিতির পক্ষ থেকে আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং আশা করি, তিনি ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক উদ্যোগে আমাদের পাশে থাকবেন।"
ছাত্রদলের অনেক নেতাও এই মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, হিরনের মতো নেতারা ছাত্র রাজনীতিকে মানবিক দৃষ্টান্ত হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
এই ঘটনা প্রমাণ করে, রাজনীতি যদি মানবিক চিন্তা-চেতনা দিয়ে পরিচালিত হয়, তবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর চোখে নতুন আশার আলো জ্বলেছে; আর সেই আলো জ্বালিয়েছেন একজন ছাত্রদল নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন মানবিক ও ইতিবাচক ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরাও এটিকে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন।
উল্লেখ্য, এ সময় জাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামিমা সুলতানা, জাবি ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ এবং বগুড়া জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC