ব্যাংকিং ব্যবস্থার জরুরি ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। কিন্তু এত বড় একটি একাডেমিক ও প্রশাসনিক কমিউনিটির সকল আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে একটি মাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে, যা সেবার মান, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং আধুনিক ব্যবস্থাপনার দিক থেকে অত্যন্ত দুর্বল।
স্মারকলিপির তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য:
সেবার মানে ঘাটতি ও ভোগান্তি: টাকা জমা বা উত্তোলনের সময় দীর্ঘ লাইন, নিয়মিত সার্ভার সমস্যা, অকার্যকর এটিএম বুথ এবং অ্যাপ ব্যবহার করে অর্থ পাঠানোর পরও তা অ্যাকাউন্টে পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগা; এসব সমস্যা এখন নিয়মিত ও স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
প্রযুক্তিগত দুর্বলতা ও অটোমেশনের অভাব: এই ব্যাংকে এখনো একাউন্ট-টু-একাউন্ট অর্থ স্থানান্তর ম্যানুয়ালি করতে হয়, অ্যাপ থেকেও তাৎক্ষণিক লেনদেন সম্ভব নয়। আধুনিক ব্যাংকিং সেবা যেখানে ডিজিটাল, সেখানে এমন ধীর গতির ও পুরনো পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য প্রদানে অবহেলা: ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা জমা সংক্রান্ত এসএমএস পাঠানো বন্ধ রয়েছে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই সেবা বন্ধ; এমন অজুহাত অত্যন্ত দায়িত্বহীন ও অগ্রহণযোগ্য।
অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ: "স্টুডেন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্ট" থাকা সত্ত্বেও অগ্রণী ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি সার্ভিস চার্জ আদায় করছে, যা শিক্ষার্থী-সুলভ নীতির পরিপন্থী।
একক ব্যাংক নির্ভরতা ও প্রতিযোগিতাহীনতা: ক্যাম্পাসে একমাত্র ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম চালানোর ফলে কোনো প্রতিযোগিতা নেই, নেই উন্নত সেবা দেওয়ার তাগিদ। এতে শিক্ষার্থীদের উপর ন্যস্ত আর্থিক সেবার মান নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
ব্যাংকিং সংক্রান্ত সেবার মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু সুপারিশ পেশ করেছে:
১ - অগ্রণী ব্যাংকের পাশাপাশি অন্তত একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও শিক্ষার্থীবান্ধব বেসরকারি ব্যাংককে ক্যাম্পাসে পূর্ণাঙ্গ শাখা বা উপ-শাখা পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হোক।
২ - মুরাদ চত্বরে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাক বুথটিকে পূর্ণাঙ্গ শাখায় রূপান্তর করা হোক।
৩ - ব্যাংকিং সেবার গুণগত মান উন্নয়নে একটি যৌথ তদারকি কমিটি গঠন করা হোক।
৪ - বৃত্তির তথ্য এসএমএস বা অ্যাপের মাধ্যমে পুনরায় সরবরাহ নিশ্চিত করা হোক।
৫ - শিক্ষার্থীদের উপর আরোপিত অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ বাতিল করে স্বচ্ছ, যৌক্তিক এবং শিক্ষার্থী-সুলভ চার্জ কাঠামো প্রণয়ন করা হোক।
স্মারকলিপিতে সর্বশেষ উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাধিক ব্যাংকের সেবা চালু রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প ও গুণগত সেবা নিশ্চিত করেছে।
আমরা চাই, আমাদের ক্যাম্পাসেও একইভাবে উন্নত, প্রতিযোগিতামূলক ও যুগোপযোগী ব্যাংকিং কাঠামো গড়ে উঠুক। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশা করি, প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি ও উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং কাঠামোর প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC