ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫

শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

বেরোবিতে পাঁচ দিনব্যাপী শহিদ আবু সাঈদ বইমেলার উদ্বোধন

Five-day Shaheed Abu Sayeed Book Fair inaugurated in Berobi
ছবি: প্রতিনিধি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) জুলাই বিপ্লবের অগ্রসৈনিক আবু সাঈদের স্মরণে ‘শহিদ আবু সাঈদ বইমেলা’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা স্মারক মাঠে পাঁচ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করেন শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও শহিদ ফেলানী খাতুনের বাবা নূর ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এ উপলক্ষে মেলা প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনে শহিদ আবু সাঈদের অসামান্য অবদানকে স্মরণ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে এই বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বইমেলায় লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীর প্রতিদিনের পদচারণা হবে সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। উপাচার্য আরো বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয়া আবু সাঈদ শ্রেষ্ঠ বীর হিসেবে বিশ্ব দরবারে আলোচিত নাম। শহিদ আবু সাঈদের হত্যাকারীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবিও জানান উপাচার্য।

এসময় তিনি জানান, আগামীতে আরো বড় পরিসরে মাসব্যাপী শহিদ আবু সাঈদ বইমেলার আয়োজন করা হবে। এবারের বই মেলাকে সার্থক করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য।

শহিদ আবু সাঈদ বইমেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. মোঃ ইলিয়াছ প্রামানিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, শহিদ ফেলানী খাতুনের বাবা নূর ইসলাম, তিস্তা ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল আলম আল-আমিন, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বক্তব্য রাখেন। পাঁচ দিনের এই বইমেলা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন বেলা ২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বইমেলা চলবে।

বইমেলার উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, শহিদ ফেলানী খাতুনের বাবা নূর ইসলাম ও মাতা জাহানারা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে দুটি আবাসিক হলের নতুন নামকরণ উদ্বোধন করেন। শহিদ ফেলানী হলের নতুন নাম উদ্বোধন করেন শহিদ ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মাতা জাহানারা বেগম।

এসময় উপাচার্য বলেন, শহিদ ফেলানী বাংলাদেশের সেইসব নিরপরাধ মানুষদের একজন, যাদেরকে সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের গুলিতে মেরে ফেলা হয়েছে। সেই অগণিত মৃত মানুষের প্রতিনিধি ফেলানী খাতুনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের নামকরণ করার প্রস্তাব প্রদান ও তা কার্যকর করার জন্য শিক্ষার্থী ও সিন্ডিকেট সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
এই নামকরণের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ফেলানীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে যাবে। এসময় শহীদ ফেলানী হলের প্রভোস্ট ড. মোছাঃ সিফাত রুমানাসহ সহকারী প্রভোস্টসহ হলের ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজয় ২৪ হলের উদ্বোধন করেন শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। এসময় বেরোবি উপাচার্য বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহিদ আবু সাঈদসহ অসংখ্য তরুণ আত্ম বলিদানের মাধ্যমে যে ভূমিকা রেখেছে, তা আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার জন্য বিজয় ২৪ হলের নামকরণ করা হয়েছে। এসময় বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্ট মোঃ আমির শরীফসহ সহকারী প্রভোস্টসহ ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সিন্ডিকেটের ১১০তম সভার সিদ্ধান্তের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুটি হলের নতুন নামকরণ করা হয়।