সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বেইলি রোডের আগুনে কুমিল্লার লালমাইয়ের দুই বোনের মৃত্যু

Two sisters of Cumilla's Lalmai died in Bailey Road fire
ছবি: সংগৃহীত

মালেয়িশয়া যাওয়ার কথা ছিল রিয়ার। কাটা ছিল টিকেটও। ফ্লাইট শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে। কিন্তু বেইলি রোডের সেই আগুন কেড়ে নিলো একটি স্বপ্ন। ওই আগুন শুধু রিয়া নয়, কেড়ে নিয়েছে বোন আলিশার জীবন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে একটি রেস্টুরেন্টে লাগা আগুনে দুই বোন নিহত হন। ওই আগুন এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে সরকার। নিহত দুই বোন ফৌজিয়া আফরিন রিয়া ও সাদিয়া আফরিন আলিশা কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের চরবাড়িয়া এলাকার কোরবান আলীর মেয়ে। রিয়া মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর সাদিয়া আফরিন আলিশা ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

একই দুর্ঘটনায় মারা গেছে, রিয়া ও আলিশার খালাতো বোন নুসরাত জাহান নিমু। সে কুমিল্লা সদর উপজেলার হাতিগড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। তারা একই সঙ্গে শপিং করতে গিয়েছিল।

রিয়া ও আলিশার বাবা বলেন, শুক্রবার রাতে রিয়ার মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট ছিলো। আগেরদিন গিয়েছে শপিং করতে ও তাদের এক আন্টির সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে গিয়ে দুই মেয়ে আর ফেরেনি। তারা যাবার আগে বলেছিলো, ‘বাবা আমরা তাড়াতাড়ি ফিরবো’।

কোরবান আলী বলেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা এলাকায় এসেছিল। সে কয়েকদিন বাড়িতে থেকে চলে গেছে। শুক্রবার রাতে আমিসহ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। টিকিটও কেটেছিলা। কিন্তু গত রাতেই সে মারা গেছে। নিমুও তাদের খালাতো বোন। একই সঙ্গে গিয়ে আর ফেরেনি।

কাঁদতে কাঁদতে কোরবান আলী বলেন, যখন জীবিত মানুষ উদ্ধার শেষ হলো তখন আমার শরীর কাঁপছিল। আমি ঘামছিলাম। বুকের ভেতর কেমন জানি হয়েছিল। আমার চোখে পানি আর বুক ভারি হয়ে আসছিল। রাত যখন ১০ টার কাছাকাছি তখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেয়া হলো।

কোরবান আলী অভিযোগ করে বলেন, আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তারা সব সময়ই আতঙ্কে থাকি। একটি দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই নড়েচড়ে বসে। আবার কয়েকদিন পরে সব আগের মত হয়ে যায়। ডিস, ইন্টারনেট আর বৈদ্যুতিক তারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ঠিক জায়গায় স্থাপন করে পানি দিতে পারেনি। আর ফলাফল হলো লাশের পর লাশ।