এপ্রিল ১৬, ২০২৫

বুধবার ১৬ এপ্রিল, ২০২৫

বাইউস্টে ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন

বাইউস্টে ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন
বাইউস্টে ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন/ছবি: প্রতিনিধি

বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (বাইউস্ট)-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন এবং বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপিত হয়েছে।

এই উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বাইউস্ট কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন বাইউস্টের উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নূর হোসেন, বিএসপি, পিএসসি। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাইউস্টের রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল খন্দকার মাহমুদ হোসেন, এসপিপি, পিএসসি (অব.), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক লে. কর্নেল শাব্বির আহমেদ সিদ্দিকী (অব.), বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাইউস্ট কালচারাল ক্লাবের উপদেষ্টা ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সালমা পারভিন সুমা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাইউস্টের উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নূর হোসেন, বিএসপি, পিএসসি। তিনি তার বক্তব্যে সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং বাইউস্টের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরসমূহের ধারাবাহিক অগ্রগতি ও অর্জনসমূহ তুলে ধরেন।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারিখে নলেজ, উইজডম এন্ড টেকনোলজি মটো নিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালবাসা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়টি ১০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি আরও বলেন যে, আমাদের প্রত্যাশা এবং দৃঢ় বিশ্বাস শীঘ্রই এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সকল ধরণের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে।

বাইউস্টের ১০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন এবং বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল এভয়েডরাফা অংশগ্রহণ করে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে রাঙিয়ে তুলতে বাইউস্ট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জমকালো বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে শিক্ষার্থীরা বাঙ্গালিয়ানা উদ্‌যাপনের জন্য বিভিন্ন স্টলে পান্তা-ইলিশসহ নানাবিধ দেশীয় খাবারের আয়োজন করে। এছাড়াও মেলায় নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইডের আয়োজন করা হয়। বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরতে ক্যাম্পাস জুড়ে আলপনা আঁকা হয়।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ৭ম বছর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়।

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুরে ১০ একরেরও বেশি আয়তনের মনোরম ক্যাম্পাসে বর্তমানে ৬টি বিভাগের অধীন ১০টি প্রোগ্রামে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, বিশাল খেলার মাঠ, ৩টি আবাসিক হল, যাতায়াতের জন্য নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

এছাড়াও ক্যাম্পাসে জিমনেসিয়াম, ক্যান্টিন, ডাইনিং হল এবং সুবিশাল অডিটোরিয়াম ভবন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার নিযুক্ত রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৩জন স্থায়ী দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী রয়েছেন এবং এডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি হিসাবে দেশের স্বনামধন্য শিক্ষকবৃন্দ দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি প্রোগ্রাম ওবিই কারিকুলামের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

লেখাপড়ার পাশাপাশি ১২টি সক্রিয় ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কো-কারিকুলার এবং এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে।

গত ১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেসব গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী তৈরি করেছে তাদের ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। এছাড়া বাকি শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ দেশে ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে।