নভেম্বর ২৩, ২০২৪

শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বহিষ্কারের প্রতিবাদে অনশন ববি শিক্ষার্থীর, উপাচার্যের আশ্বাসে প্রত্যাহার

বহিষ্কারের প্রতিবাদে অনশন ববি শিক্ষার্থীর, উপাচার্যের আশ্বাসে প্রত্যাহার
বহিষ্কারের প্রতিবাদে অনশন ববি শিক্ষার্থীর, উপাচার্যের আশ্বাসে প্রত্যাহার। ছবি: প্রতিনিধি

স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনে বসেছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী, পরে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন প্রত্যাহার করে নেন ঐ শিক্ষার্থী। 

বুধবার (১০ই জুলাই) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ডফ্লোরে আমরণ অনশনে বসেন বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ।

মিডটার্ম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও পরীক্ষা কক্ষে শিক্ষকের সাথে অশোভন আচরণের দায়ে গত মঙ্গলবার যাদবকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বহিষ্কারদেশের প্রতিবাদেই আজকে তিনি আমরণ অনশনে বসেছিলেন। অনশনের প্রায় দুই ঘন্টা পর বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার আশ্বাসে তিনি অনশন ভঙ্গ করেন। এর পরে ঐ শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, যাদব কুমার ঘোষ অনার্স ৪র্থ বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরিক্ষায় ৪০২ নাম্বার কোর্সে নকল দেখে লিখছিলেন। এসময়ে প্রধান কক্ষ পরিদর্শক বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক মো. সাকিবুল ইসলাম হাতেনাতে ধরে ফেলেন যাদবকে৷

এসময় শিক্ষক তার থেকে উত্তরপত্র নিয়ে যেতে চাইলে, তিনি শিক্ষককে উত্তর পত্র না দিয়ে উল্টো শিক্ষকের হাত চেপে ধরেন। এবং উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম কোন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় নকলের দায়ে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ তিনি বিভাগের শিক্ষক রাজনীতির কোন্দলের শিকার।

বিভাগের শিক্ষকদের কোন্দল এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ওপরে এর প্রভাব নিয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এই বিষয় নিয়ে  মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষক কোন্দলের কারণেই আজকে আমাকে অন্যায়ভাবে আজীবন বহিষ্কারদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মিডটার্ম পরীক্ষায় নকলের দায়ে লঘু পাপে আমাকে গুরু শাস্তি দেয়া হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদে এবং অনতিবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতেই আমরণ অনশনে বসেছিলাম। পরবর্তীতে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছি এবং উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছি। বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি আবেদনটিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও শিক্ষকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের দায়ে আজীবন বহিষ্কারাদেশ দেয়। আজকে ঐ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন পরে উপাচার্য আশ্বাসে অনশন তুলে নিয়েছেন ঐ শিক্ষার্থী। বিষয়টি এখন উপাচার্যের কাছে উনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার কাছে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঐ শিক্ষার্থীকে অনশন প্রত্যাহারের জন্য বলি এবং শিক্ষার্থী অনশন প্রত্যাহার করেন। এ শিক্ষার্থী আমার নিকট একটি লিখিত আবেদন করেছে। ঐ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক দিক বিচার বিবেচনা করে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এবং এখানে শিক্ষকদের সম্মানের দিকটাও বিবেচনায় থাকবে বলে জানান উপাচার্য।