গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে বা কোন ব্যক্তিগত আইডি থেকে শিশু-কিশোর হারানোর তথ্য ফেসবুকে ভাসতে দেখা যাচ্ছে। এর বেশিরভাগই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা কেন্দ্রিক ফেসবুক আইডি থেকে ছড়ানো হচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এতথ্য গুলো শুধুই গুজব। যারা হারিয়েছে তারা কিছুক্ষণের জন্য বাসায় ছিল না। আবার কোনো শিশু দূরে তাদের বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল।
পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। যে বা যারা এইসব তথ্য সত্য বলে পোস্ট করছে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে শিশু হারানোর বিষয়টি ভাইরাল হয়। অনেকে বুঝে না বুঝে এসব তথ্য শেয়ার করা শুরু করেন। এমন তথ্য দেখতে পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
সারাদিন ব্যাপী এসব পোস্টগুলোর স্ক্রিনশর্ট থেকে দেখা গেছে, কিছু পোস্টে কেবল মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ হচ্ছে, আবার কিছু পোস্টে মুসলিম ছাত্র, কোথাও মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। কোথাও স্থান বদলে ঢাকা, চট্টগ্রামের সঙ্গে অন্যান্য জেলার নামও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
স্ক্রিনশট থেকে প্রাপ্ত পোস্ট দাতা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জার ও মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে তাদের ভাষ্য, দু’দিন আগে ঘণ্টা তিনেকের জন্য তারা একটু দূরে খেলতে গিয়েছিল। পরে আবার ফিরে এসেছে। আবার কেউ কেউ বলেন, কোন এক ফেসবুক বন্ধুর পোস্ট তিনি শেয়ার দিয়েছেন।
এছাড়াও বেশ কয়েকজন পোস্ট দাতারা পোস্ট মুছে ফেললেও স্ক্রিনশটগুলো বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে ঘুরছে। তারা আসলে কিছুই জানেন না কে নিখোঁজ হল, কখন ফিরে আসলো কিছুই বলতে পারেন না তারা। যারা নিজেদের আত্মীয় স্বজন বা বোন কিংবা বন্ধুর বোন বলে পোস্ট দিয়েছে তাদের কোনো নিকট আত্মীয় নিখোঁজ হয়নি।
একের পর এক শিশু নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার অতনু চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ধরনের শিশু নিখোঁজের বহু পোস্ট আমাদের চোখে পড়েছে। তবে বিষয়টি গুজব মনে হচ্ছে। কারণ, এত শিশু নিখোঁজ হলে থানায় নিশ্চয় অভিযোগ আসতো।’
না জেনে কোনো কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম সেল বলছে বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন। যারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর পোস্টগুলো নিশ্চিত না হয়ে বিশ্বাস করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করবেন।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে চ্যানেল আই অনলাইনের নিউজটি শেয়ার করে ফেসবুকে শিশু নিখোঁজের তথ্যগুলো গুজব বলা হয়েছে।