দেশের ৩২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানতে চান, কোন স্কুলগুলো ভালো করছে এবং এর পেছনের কারণ কী। জবাবে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানান, প্রাথমিক শিক্ষায় অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ মান বৃদ্ধি এখনও অর্জিত হয়নি। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় বর্তমানে স্কুলগুলোকে মূল্যায়ন করে র্যাঙ্কিং করছে এবং পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
ড. পোদ্দার আরও উল্লেখ করেন, মূল্যায়নে দেখা গেছে যে সকল স্কুলের শিক্ষার মান ভালো, সেখানে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক একটি বিশাল ভূমিকা রাখছে। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন যে বর্তমানে দেশের ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এবং এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।
প্রধান উপদেষ্টা শুধু শূন্য পদ পূরণের নির্দেশ দেননি, বরং প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যদের প্রাধান্য দিতে হবে।
[caption id="attachment_40112" align="alignnone" width="1200"] বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস | ছবি: সংগৃহীত[/caption]
এ লক্ষ্যে কয়েকটা ক্যাটাগরি করার কথা বলেন তিনি, যেখানে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা অগ্রাধিকার পাবেন। একই সাথে, তরুণ শিক্ষকদেরও প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা আবশ্যক।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে অতিদ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রেও প্রধান উপদেষ্টা নীতিমালায় পরিবর্তন আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, অনেক সময় শিক্ষকরা এক উপজেলায় নিয়োগ পেয়ে পরে অন্য উপজেলায় বা শহরের কাছে বদলির জন্য সুপারিশ ও তদবির করেন। এক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা ও প্রক্রিয়া থাকতে হবে এবং কেবল সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বদলি সম্পন্ন হতে পারবে।
এছাড়াও, স্কুলের পরিবেশকে নারীবান্ধব করার বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টা গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জানতে চান, স্কুলে মেয়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে কিনা এবং অবকাঠামো নারীবান্ধব কি না। তিনি নির্দেশ দেন যে স্কুলের ভবন নির্মাণের সময় কমিটিতে অন্তত একজন নারী স্থপতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে নারীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত হয়। তিনি পরিকল্পনা, চিন্তা এবং বাস্তবায়নের প্রতিটি স্তরে মেয়েদের বিষয়টিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দেশের সকল প্রাথমিক স্কুলকে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ এবং মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির বিষয়েও জোর দেন।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC