জানুয়ারি ৩০, ২০২৫

বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

প্রতিটি অবিচারের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে এর মূলে রয়েছে দুর্নীতি: কুমিল্লায় দুদক চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘কমিশনের কর্মকর্তারা যদি দুর্নীতিমুক্ত থাকেন, তবে সামগ্রিক দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘সমাজ থেকে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয়। অতীতেও দুর্নীতি ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দুর্নীতি অনেকটাই কমানো সম্ভব।’

গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) কুমিল্লায় দুর্নীতিবিরোধী গণশুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ শুনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত কিংবা বিভিন্ন সময়ে যে আন্দোলন হয়েছে বা হচ্ছে তার পেছনের কারণটা কী? কারণ হচ্ছে, সমাজে আমরা এক ধরনের অবিচার লালন করি। প্রতিটি অবিচারের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে এর মূলে রয়েছে দুর্নীতি।

এই অনুষ্ঠানে কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানির আগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বুথ স্থাপন করে অভিযোগ নেয় দুদক। সেখানে ১২১টি অভিযোগ জমা হয়। ৪০টি অভিযোগ তফসিলভুক্ত হওয়াতে সেগুলো গ্রহণ করে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন ভুক্তভোগীরা।

গণশুনানিতে কুমিল্লার বরুড়া থেকে এক ব্যক্তি কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে তার ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন।

এ সময় তিনি প্রমাণস্বরূপ আনসার সদস্যের ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার ভিডিও হলভর্তি জনতার সামনে বড় স্ক্রিনে প্রচারের অনুরোধ করেন। তা প্রচারও করা হয়। ওই ভুক্তভোগী আবার বলেন, দুদকে অভিযোগের পর তার কাছ থেকে নেওয়া ৫০০ টাকা ফেরত দেওয়া হয় বিকাশের মাধ্যমে।

এদিকে ২০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে কুমিল্লা জেলা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিরুদ্ধে। মো. রাসেল নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তিনি পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন করতে গেলে তাকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পাশের একটি গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা চেয়ে পরে চা নাশতার জন্য ২০০ টাকা নেন সেলিম নামের এক কর্মকর্তা। তার এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।

এছাড়াও জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কুমিল্লা সদর হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন ভুক্তভোগীরা।