জুলাই ৭, ২০২৫

সোমবার ৭ জুলাই, ২০২৫

পুলিশি হেফাজতে হামলার ভাইরাল ভিডিও আসলে এআই দিয়ে তৈরি

পুলিশি হেফাজতে হামলার ভাইরাল ভিডিও আসলে এআই দিয়ে তৈরি
/ছবি: রিউমর স্ক্যানার ফেসবুক পেজ

সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশি হেফাজতে থাকা এক আসামির মাথায় পেছন থেকে এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে আঘাত করছেন। ভিডিওটি ঘিরে দাবি করা হয়—আসামি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এবং হামলাকারী তার বিরোধী দলের কর্মী ও প্রতিবেশী।

তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধানে এসব দাবি ভিত্তিহীন ও ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভিডিওটি আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি।

রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায়, ভিডিওটির দৃশ্য মিলে যায় মৌলভীবাজারের স্থানীয় গণমাধ্যম ‘পাতাকুঁড়ির দেশ’ ও জাতীয় দৈনিক সমকালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে। সেখানে দেখা যায়—ভিডিওতে থাকা পুলিশ সদস্য ও আসামি একই, তবে ওই প্রতিবেদনে কোনো হামলার তথ্য নেই।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুন, কুলাউড়ায় এক ছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যার মামলায় জুনেল মিয়া নামের এক আসামিকে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি আদালতে হাজির করা হয়। তবে তার ওপর হামলা বা রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো উল্লেখ গণমাধ্যম বা অন্য কোনো উৎসে পাওয়া যায়নি।

রিউমর স্ক্যানার বিশ্লেষণে ভাইরাল ভিডিওর নিচের কোণে “MINIMAX | Hailuo AI” নামের একটি ওয়াটারমার্ক দেখা যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এটি চীনের একটি উন্নত এআই প্ল্যাটফর্ম, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে মাত্র ৬ সেকেন্ডের ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। ভাইরাল ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ঠিক ৬ সেকেন্ড।

এ ছাড়া Cantilux নামের একটি এআই-চিত্র বিশ্লেষণকারী প্ল্যাটফর্মে ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখা যায়—এটি ৮৫ শতাংশ সম্ভাবনায় এআই দিয়ে তৈরি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেফতার হওয়া কিছু নেতার ওপর আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই বাস্তব প্রেক্ষাপটকে পুঁজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের কৃত্রিম ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে।

ভিডিওটি একটি এআই-জেনারেটেড ভুয়া কনটেন্ট, যা সত্য ঘটনাকে বিকৃত করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার এই ভিডিও ও এর ভিত্তিতে প্রচারিত দাবি “মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

আরও পড়ুন