১১৯ রানের পুঁজি নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোমাঞ্চকর জয়ের স্বাদ পেয়েছে ভারত। গতরাতে ‘এ’ গ্রুপের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ভারত ৬ রানে হারিয়েছে পাকিস্তানকে।
প্রথমে ব্যাট করে ১৯ ওভারে ১১৯ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৩ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথম ম্যাচে সুপার ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারের পর ভারতের বিপক্ষে জিততে না পারায় পাকিস্তানের সুপার এইটে উঠার পথ কঠিন হয়ে গেল। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বির্তকিত নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি বৃষ্টি কারনে ৫০ মিনিট পর শুরু হয়। পরবর্তীতে খেলা শুরু হলে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। ব্যাট হাতে নেমে ১ ওভার খেলা হবার পর আবারও বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। বৃষ্টির পর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহর শিকার হয়ে ৪ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন বিরাট কোহলি।
পরের ওভারে কোহলির পথ অনুসরণ করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ১টি করে চার-ছক্কায় ১২ বলে ১৩ রান করে পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হন রোহিত।
১৯ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। তৃতীয় উইকেটে ৩০ বলে ৩৯ রান যোগ করে ভারতকে চাপমুক্ত করেন উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থ ও ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে চার নম্বরে নামা অক্ষর প্যাটেল। অষ্টম ওভারে প্যাটেলকে(২০)থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন নাসিম।
প্যাটেল ফেরার পর সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে ভারতকে ভালো অবস্থায় নেন পান্থ। ১১ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৮৯ রান পেয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু ১২তম ওভার থেকেই ব্যাটিং ধস নামে ভারতীয় ইনিংসে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। ৮ ওভারে ৩০ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় ভারত।
৬টি চারে ৩১ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন পান্থ। শেষ সাত ব্যাটারের কেউই অংক স্পর্শ করতে পারেননি। পাকিস্তানের নাসিম ও হারিস ২১ রানে ৩টি করে এবং আমির ২টি উইকেট নেন।
১২০ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। জুটিতে ২৮ বলে ২৬ রান যোগ করার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহর বলে ব্যক্তিগত ১৩ রানে আউট হন বাবর।
বাবর ফেরার পর ৩৩ বলে ৩১ রানের জুটিতে পাকিস্তানের রানের চাকা সচল রাখেন রিজওয়ান ও উসমান খান। ১১তম ওভারে উসমানকে(১৩) লেগ বিফোর আউট করেন স্পিনার প্যাটেল। ১২ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৭২ রান তুলে জয়ের পথে ভালোভাবেই টিকে ছিলো পাকিস্তান।
এসময় ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৮ বলে ৪৮ রান দরকার ছিলো পাকিস্তানের। কিন্তু ১৩তম ওভার থেকেই ম্যাচের চিত্র পাল্টে দেয় ভারতের বোলাররা।১৩ রান করা ফখর জামানকে শিকার করে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরার পথ দেখান হার্ডিক পান্ডিয়া। ১৫তম ওভারে উইকেটে সেট ব্যাটার রিজওয়ানকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দেন বুমরাহ। ১টি করে চার-ছক্কায় ৪৪ বলে ৩১ রান করেন রিজওয়ান।
এরপর শাদাব খানকে ৪ রানে পান্ডিয়া ও ইফতিখার আহমেদকে ৫ রানে বুমরাহ আউট করলে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে ভারত। শেষ ওভারে জিততে ১৮ রানের সমীকরণ পায় পাকিস্তান। আর্শদীপের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে আউট হন ১৫ রান করা ইমাদ ওয়াসিম। পরের দুই বলে ২ রান আসে। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মারেন নাসিম।
শেষ বলে ৮ রানের দরকারে মাত্র ১ রান নিতে পারে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১১৩ রান পর্যন্ত যেতে পারে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আটবারের দেখায় এই নিয়ে সাতবার জিতলো ভারত। যার মাধ্যমে বিশ^কাপে কোন নির্দিস্ট দলের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়লো ভারত।
বল হাতে ভারতের বুমরাহ ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন। পান্ডিয়া ২টি, আর্শদীপ ও প্যাটেল ১টি উইকেট নেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কম রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জয়ে শ্রীলংকার রেকর্ডে ভাগ বসালো ভারত। ২০১৪ সালে ১১৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিলো শ্রীলংকা।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এত কম পুঁজি নিয়ে আগে কখনও জিততে পারেনি ভারত। এর আগে ২০১৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৯ রানের পুঁজিনিয়ে ম্যাচ জিতেছিলো টিম ইন্ডিয়া।
সূত্র : বাসস
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC