এপ্রিল ২২, ২০২৫

মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল, ২০২৫

নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী

নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী
নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী/ছবি: প্রতিনিধি

নারীরা আমাদের মা, বোন, স্ত্রী ও মেয়ে। সর্বদা তাদের নিরাপত্তা, সুন্দর চলাফেরা এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা মেটাতে একজন পুরুষ তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো হাড়ভাঙা পরিশ্রমের আদলে কাটিয়ে দেয়।

পুরুষ কেবল সেসব মানুষদের মুখে মিষ্টি হাসি দেখে ঘামভেজা শার্ট রোদে শুকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। সারাদিন রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে কিংবা অফিসের ধকল সহ্য করে পুরুষ যখন মলিন মুখে বাসায় ফিরে তখন ছোট্ট মেয়েটার হাসি দেখলে তার সব ক্লান্তি বৃষ্টির মত সাফ হয়ে যায়।

পুরুষের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নারীর অংশগ্রহণে সহজ হয়। কিন্তু একজন নারী যখন সারাদিন কাজ করে ঘরে ফেরা পুরুষের কানে অন্যদের নিয়ে কুমন্ত্রণা দেয় তখন সে পুরুষ নিজের ক্লান্তি, অবসাদে বিষণ্ন হয়ে হুটহাট অপ্রীতিকর সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হটে না।

পুরুষ তখন রাগের মাথায় যে কাউকে খুন পর্যন্ত করতে পারে। আর হ্যাঁ, ঠিক এই মোমেন্টটাই কাজে লাগায় আমার মা – বোনেরা। তারা সারাদিনের যত ঝুট ঝামেলা, ঝগড়া – মারামারি, কথা কাটাকাটির বিস্তর ঘটনাবলি পুরুষের কানে কর্কশ কিংবা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করার জন্য কান্নামাখা কণ্ঠে কাজ করে বাসায় আসা স্বামী কিংবা ছেলের কাছে বলে।

অথচ তারা যদি ঐ সময়টায় সে পুরুষকে এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত বানিয়ে দিত কিংবা হাসিমুখে কাজের খোঁজখবর নিত তাহলে সংসারটা কতই না ভালোবাসায় ভরে যেত এবং হুটহাট অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত না।

নারীরা চাইলে ঝুট বলে কিংবা অপমান করে একজন পুরুষকে অন্যায়ের পথে ফুসলিয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের সেই সক্ষমতা আছে। আবার তারা চাইলে সত্যের পথে লড়াকু সৈনিক হিসাবেও গড়ে তুলতে পারে।

কিন্তু বর্তমানে নারীদের পজিটিভ ইনফ্লুয়েন্স বেশ কমে গিয়েছে। তারা ছোটোখাটো বিষয়ে পুরুষদের লেলিয়ে দেয় অথচ একবারের জন্য ও পুরুষটা যাচাই করার চেষ্টা করে না যে সে যা বলছে সেটা সত্যি, ন্যায় কিনা। অর্থাৎ নারী বিশ্বাসে তারা অন্ধই বটে। যা বলে তা-ই গ্রোগাসে গিলে ফেলে। যার ফলে দেশে প্রতিনিয়ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। অথচ চাইলে এই ছোট বিষয়গুলো কথা বলেই সমাধান করা যায়।

চারপাশে এতসব কুমন্ত্রণা প্রদানকারী ও হিংসা, ইগো বশবর্তী হওয়া নারীদের পাশাপাশি অনেক ভালো হৃদয়ের নারী আছেন। যারা ঝগড়াঝাঁটি জড়ানো অপেক্ষা পুরুষদেরকে এসব থেকে বিরত রাখতে সর্বদা চেষ্টা করে।

তারা পুরুষদের উল্টো ঝামেলা থেকে রক্ষা করে। সংসারে ছোটোখাটো ভুলগুলো ভালোবাসায় মিটিয়ে ফেলে। তারা একজন পুরুষকে তৈরি করে সৎ, সাহসী ও অন্যায়ের প্রতিবাদকারী হিসেবে। তারা গড়ে তুলে আদর্শ সন্তান। তারা পৃথিবীর কল্যাণকর কাজে ব্রত থাকতে পছন্দ করে। আর তাদেরকে নিয়েই আমাদের নজরুল বলেছিলেন—

“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

 

সাইদুল হাসান
সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
সম্পাদক, কৈশোরিকা
শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঠিকানা-
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কোটবাড়ি, আদর্শ সদর, কুমিল্লা।
মুঠোফোন – ০১৮৬৫০১৭৮১২