জানুয়ারি ৫, ২০২৫

রবিবার ৫ জানুয়ারি, ২০২৫

দিনের পর দিন যানজট বাড়ছে কুমিল্লা সিটিতে, অতিষ্ট নগরবাসী

Rising Cumilla - Cumilla City
ছবি: রাইজিং কুমিল্লা

বিগত ২০২৪ সাল শেষ হয়ে ২০২৫ শুরু হলেও উন্নতির দেখা নেই কুমিল্লা সিটির যানজটের। প্রতিদিন যেনো যানজটে থমকে যায় এই নগরী। মূল সড়কগুলো ছেড়ে অলিগলিতেও থেমে নেই এ যানজট।

নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, অনুমোদনহীন চার ও তিন চাকার যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশার লাগামহীন চলায় এখানকার রোজকার ঘটনা অসহনীয় যানজট। নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়, পুলিশ লাইন, চকবাজার, শাসনগাছা, টমছম ব্রিজসহ সব সড়কেই লেগে থাকে যানজট। ঝাউতলা থেকে শুরু করে কান্দিরপাড় পর্যন্ত, কান্দিরপাড় থেকে সালাহউদ্দিন মোড় পর্যন্ত সড়কের বিশাল অংশজুড়ে পার্ক করে রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য গাড়ি।

এসব গাড়ি রাখায় রাস্তায় চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে যায়। নগরীর প্রতিটি সড়কেই রয়েছে অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ দোকান। এসব দোকানের কারণেও সড়কে চলার পথ সংকীর্ণ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও যানবাহনের অব্যবস্থাপনার কারণেই নগরীর অন্যতম দুই প্রবেশমুখ শাসনগাছা ও টমছম ব্রিজে সব সময়ই যানজট লেগে থাকে।

নগরের বাসিন্দারা বলছে, ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা হলেও এখনো নগরের সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সিটি কর্পোরেশনের অব্যবস্থাপনার কারণে বছরের পর বছর ধরে যানজট সমস্যা বেড়ে তীব্র আকার ধারণ করছে।জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে শুরু করে নগরের বাসিন্দারা বলছেন, যানজটের প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ইজি বাইক ও অটোরিকশা। ইজি বাইক স্থানীয়ভাবে ‘মিশুক’ নামে পরিচিত। বিগত সময়ে সিটি করপোরেশন নগরে ছয় হাজার মিশুক ও পায়ে চালিত রিকশা অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল ।সে হিসেবে নগরের সড়কে ছয় হাজার ধারণ ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪০ হাজারের বেশি মিশুক-অটোরিকশা। নগরের সড়কে চলাচলের জন্য কোনো প্রকার অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন না হওয়ার কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে মিশুক ও অটোরিকশা।এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামছুল আলম বলেন, বর্তমানে যানজট সমস্যা তীব্র এটা সত্য। সমস্যা সমাধানে আমরা ট্রাফিক বিভাগকে নিয়ে বৈঠক করেছি। এ ছাড়া অতীতে যানজট নিরসনে যানবাহন সীমিতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল— সেটিও আমরা কার্যকর করার চেষ্টা করছি। পাঁচ হাজার ব্যাটারিচালিত মিশুক ও এক হাজার পায়েচালিত রিকশার নিবন্ধন দেওয়ার জন্য ওই সময় আবেদন ফরম জমা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও আমরা যাচাই করে দেখছি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক কামাল পাশা বলেন, যে যেভাবে পারছে সেভাবে সড়কে মিশুক ও অটোরিকশা নামাচ্ছে। নগরের মালিক সিটি কর্পোরেশন, তারা সিদ্ধান্ত দেবে আর আমরা সেটা বাস্তবায়ন করব। কিন্তু এখনো সেটা সম্ভব হয়নি। আমরা মতামত দিয়েছি নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে ২০০ করে পাঁচ হাজার ৬০০ মিশুক ও রিকশার অনুমোদন দেওয়া হোক। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা সর্বোচ্চ সাত হাজার হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪০ হাজারের বেশি মিশুক ও অটোরিকশা, যা প্রতিদিনই বাড়ছে। তাহলে যানজট সমস্য আমরা দূর করব কিভাবে?

নগরীর অশোকতলার বাসিন্দা তামিম বলেন, নগরীর যানজটে আমাদের দুর্ভোগ লাগাম ছাড়িয়েছে। যানজট কমাতে অবৈধ যানবাহন বন্ধ ও নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে হবে।