দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। কোথাও বুক সমান পানি কোথাও নেই ঠাই কোথাও আবার শুধু বাড়ির চাল পানির উপরে আছে। এমন বিপর্যয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ নিয়েছে যাচ্ছেন অনেকে। তবে সবচেয়ে বড় সংকট হয়েছে দাঁড়িয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা।
এ বিষয় কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ অঞ্চলেই সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যোগাযোগের একমাত্র উপায় এখন নৌপথ। তবে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় সাধারণ নৌকা সেখানে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা স্পিডবোট যেগুলো স্রোতের বিপরীতে চলতে সক্ষম শুধু সেগুলো দিয়েই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে। তবে তাতেও রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।
কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলায় ত্রাণ নিয়ে আসা এক দল সংগঠনের সঙ্গে কথা হয় রাইজিং কুমিল্লার। তারা বলেন, আমরা ত্রাণ নিয়ে এসেছি তবে কিছু কিছু বাড়িঘরে যাওয়া যাচ্ছেনা যাতায়াত সংকটে। আমরা স্পিডবোট ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ নিয়ে বুড়িচং উপজেলার ইসাপুর গ্রামে গেছেন নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ড থেকে এক দল সংগঠন। মোহাম্মদ আলী নামে একজন রাইজিং কুমিল্লাকে বলেন, এখানে কোনো নৌকা নেই। ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা পানির মধ্যেই পায়ে হেঁটে যাচ্ছি।
অন্যদিকে মানুষের এমন বিপদেও অনেকে লোক দেখানো ত্রাণকার্য পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ করেন এক স্বেচ্ছাসেবক। উদ্ধার ও ত্রাণকাজে নিয়োজিত ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ভাই এখানে মানুষ না খেয়ে মরতেছে আর অনেকে শোঅফ করতেছে। প্লিজ, আপনারা মানুষকে সাহায্য করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুমিল্লার এই অঞ্চলের মানুষ বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয়। জেলার নদীর পাশের অল্প কিছু বাসিন্দার নৌকা রয়েছে। ফলে উদ্ধারকাজে নৌকার সংকট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সংগঠনের সেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধেও। রাজধানী ঢাকা থেকে আসা এক যুগল বলেন, আমাদের আত্মীয়রাও আশেপাশে থাকে। তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শেষ শুনেছি তারা কোন বট গাছের নিচে আছে। তবে সেচ্ছাসেবী সংগঠনেরা আমাদের সামনে যেতে দিচ্ছে না৷
এছাড়াও তিনি বলেন, আমরা ত্রাণ দিতে এসেছি। আমরা যদি দেখাতে পারতাম (বুড়িচং উপজেলার ইসাপুর) সামনের অবস্থা কেমন, অফিস থেকে আরও ত্রাণের ব্যবস্থা করতে পারতাম।’