বাচ্চার নাম রাখা, এমন একটি কাজ যা প্রায় সকল পরিবারের কাছেই এক বিশেষ অনুষ্ঠান। নতুন জীবনের সূচনায়, এক সুন্দর নাম দিয়ে শিশুকে আশীর্বাদ করা হয়।
কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, এই নামকরণও হতে পারে কারো বিশেষ পেশা? শুধু সঠিক নাম খুঁজে দেওয়ার মাধ্যমে মানুষকে আনন্দিত করে, আপনি হয়ে উঠতে পারেন বিনা পুঁজিতে কোটিপতি। ভাবছেন এ আবার কেমন পেশা! জি নিউইয়র্কের টেলর ঠিক এমনই কাজ করে হয়েছেন কোটিপতি।
৩৩ বছর বয়সি নিউইয়র্কের বাসিন্দা টেলর। সদ্যোজাত বাচ্চাদের জন্য নিখুঁত এবং মানানসই নাম খুঁজে বের করাই তার নেশা এবং পেশা। শুধু নামকরণ করার জন্য তিনি নেন ১৮০০ ডলার পর্যন্ত! টেলরের কাছে আসেন হাজার হাজার অভিভাবক, সন্তানের জন্য একেবারে ইউনিক এবং যথাযথ নাম খোঁজার আশায়।
টেলর নামকরণের এই অদ্ভুত পেশায় পা রাখেন ২০১৫ সালে। নিজের হাতে বানানো নামের তালিকা নিয়ে ইনস্টাগ্রামে শুরু করেন তার পথচলা। প্রথম দিকে ফলোয়ার সংখ্যা ছিল বেশ কম, তবে ক্রমশ তার পোস্ট করা অভিনব নামগুলো নজর কাড়তে শুরু করে। অভিভাবকরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের সন্তানদের জন্য একদম মানানসই নাম চেয়ে পরামর্শ নিতে শুরু করেন। এভাবেই টেলর বুঝতে পারেন, বাচ্চাদের নামকরণের মাধ্যমে তিনি শুধু একটি নামই দিচ্ছেন না, বরং পরিবারগুলোর সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধকেও তুলে ধরছেন।
টেলর জানান, ২০২২ সালে তিনি ১০০টিরও বেশি বাচ্চার নাম ঠিক করে দিয়েছেন। তার পরিষেবায় অভিভাবকরা ফোনে তার সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ পান, এবং সঙ্গে পান একাধিক নামের তালিকা, যা তিনি প্রস্তুত করেন অভিভাবকদের পরিবারের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে। এই পরিষেবার জন্য তিনি সাধারণত নেন ২ লাখ ডলার পর্যন্ত। তবে যারা আরও বিস্তারিত এবং কাস্টমাইজড পরিষেবা চান, তাদের জন্যও রয়েছে বিশেষ অফার! ৯৬৭৪ ডলারের বিনিময়ে টেলর অভিভাবকদের ব্যবসা বা পেশার সাথে মিলিয়ে একেবারে নিখুঁত নামের তালিকা দেন।
যেখানে আমরা ফ্রীতেই কতজনের নাম রেখে দেই তাই না। আজ আমি মা হয়েছি, আপনারা আমার সন্তানের জন্য একটি সুন্দর নাম রাখুন। ঠিক এমনই একটি ফেসবুক পোস্টে যেন মন্তব্যের ঝড় বয়ে যায়, কমেন্টে জমা হয় হাজার হাজার নাম তাই না? কতশত মানুষের ভালোবাসা ও চিন্তা প্রকাশ পায় শুধু একটি নামের মাধ্যমে।
তবে এই নামকরণও হতে পারে কারো বিশেষ পেশা, এমনটা কে ভাবত! টেলরের মতো অনেকেই হয়তো এই অদ্ভুত পেশা বেছে নিয়ে সফল হচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, নামকরণের মতো ব্যক্তিগত বিষয়ে পেশাদারের সাহায্য নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?