
সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মহৎ বার্তা ছড়িয়ে দিতে “সবুজ গড়ো, প্রাণ বাঁচাও,, জাহাঙ্গীরনগরে গাছ লাগাও” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইচ্ছা’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো একটি ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
এই কর্মসূচির আয়োজক ও বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ইচ্ছা’ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ইতিবাচক সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে আসছে।
উক্ত কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
ক্যাম্পাসের নির্ধারিত স্থানে (টিএসসি আঙ্গিনা) দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্বকে সামনে আনা হয়।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী, যাঁরা গাছ লাগানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনের গুরুত্ব নিয়ে মতামত দেন।
তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে আজকের তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
ইচ্ছা’র সদস্যদের মতে, এ কর্মসূচির লক্ষ্য শুধু গাছ লাগানো নয়, বরং সেগুলোর সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব সৃষ্টি করা। যাতে করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে যেমন পরিবেশের উন্নয়ন ঘটে, তেমনি শিক্ষার্থীদের মাঝে সমাজ ও প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ববোধও জাগ্রত হয়।
ইচ্ছা’র উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইচ্ছা’র সভাপতি তারিফ জামান বলেন, “জুলাই শহীদদের স্মরণে সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা’র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। ইচ্ছা বরবরই ক্যাম্পাসের প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল। আমি আশা রাখি, ইচ্ছা’র এই কর্মসূচী অন্যদেরও বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করবে।”
সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “ইচ্ছা সামাজিক সংগঠন জাবি, এর পক্ষ থেকে আজকে ক্যাম্পাসের টিএসসি এলাকায় গাছ লাগানো হয়েছে। এটি ইচ্ছা’র একটি ধারাবাহিক কাজ। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা গাছ লাগিয়েছি। কাজটি সম্পন্ন করে নিজের মধ্যে ভালোলাগা কাজ করছে।”
তিনি আরো বলেন, “গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছের উপকারিতা সবার জানা। গাছের দেয়া অক্সিজেনে আমরা বেঁচে আছি, তাই আমাদের উচিত বেশি করে গাছ লাগানো। আসুন আমরা ‘নিজের লাগানো গাছের অক্সিজেনে নিজে বাঁচি’ এই স্লোগান কে ধারণ করে বেশি বেশি গাছ লাগাই।”
উল্লেখ্য, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সহযোগিতা করেছে জবের প্রস্তুতির জন্য ম্যাথ শেখার প্রতিষ্ঠান মেথড। আয়োজকদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
সবমিলিয়ে, এ কর্মসূচি শুধু একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নয়, বরং এটি ছিল প্রকৃতি ও মানবতার মেলবন্ধনের এক অনন্য উদাহরণ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রাজধানী খ্যাত ক্যাম্পাসে এ ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।