
আজকাল সুস্থ জীবনযাপন আর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মানুষ নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। কঠোর ডায়েট, ডিটক্স পানীয়, কিংবা নিয়মিত শরীরচর্চা—এসবের পাশাপাশি কিছু বিশেষ খাবারও সুস্থ থাকতে বড় ভূমিকা রাখে। তেমনই এক সহজ অথচ উপকারী পানীয় হলো ঘি কফি, যা আজকাল স্বাস্থ্যসচেতন মহলে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সকালে উঠে বা ব্যায়ামের আগে অনেকেই দুধ-চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি পান করেন। তবে, এই কফিতে যদি মাত্র এক চামচ দেশি ঘি মেশানো হয়, তবে এর উপকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। ওজন কমানো থেকে শুরু করে সার্বিক শারীরিক সুস্থতায় ঘি ও কফির এই যুগলবন্দী এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন খাবেন ঘি কফি? এক ঝলকে দেখে নিন এর ৮টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা:
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ঘি কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে মজবুত করে।
২. ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ: ঘি-এর স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ফলে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সহায়ক।
৩. ব্যায়ামের আগে এনার্জি বুস্টার: শরীরচর্চার আগে ঘি কফি পান করলে শরীর দ্রুত শক্তি পায় এবং ওয়ার্কআউটের সময় বেশি ঘাম ঝরাতে সাহায্য করে, যা মেটাবলিজম বাড়ায়।
৪. রক্তে শর্করার ভারসাম্য: সকালে ঘি কফি সেবনে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
৫. হজমে সহায়তা: দেশি ঘি হজম শক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস, অম্বল বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত পানে হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
৬. জয়েন্ট ব্যথায় আরাম: হাঁটু বা কোমরের ব্যথায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্য ঘি কফি এক দারুণ ঘরোয়া সমাধান। ঘি-এর প্রদাহরোধী গুণ জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কার্যকর।
৭. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: ঘি কফিতে বিদ্যমান ওমেগা-৩, ৬, ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮. বয়সের ছাপ কমায়: এই পানীয় নিয়মিত পান করলে ত্বকে বলিরেখা, দাগছোপ বা অকাল বার্ধক্যের ছাপ পড়ার সম্ভাবনা কমে আসে, ত্বক থাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত।
কীভাবে তৈরি করবেন ঘি কফি?
প্রথমদিকে অল্প পরিমাণ ঘি দিয়ে শুরু করা ভালো। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে উচ্চমানের দেশি ঘি ব্যবহার করুন। স্বাদে ভিন্নতা আনতে চাইলে দারচিনি, এলাচ গুঁড়ো বা সামান্য মধু মেশাতে পারেন। ঘি সবসময় ঠাণ্ডা ও শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করুন।
তবে, যারা নতুন করে ঘি কফি পান করা শুরু করতে চাইছেন, তাদের পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
সূত্র : আজকাল