কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পাহাড়ে এখন কাঁঠালের ম-ম গন্ধ। পাহাড় এলাকায় প্রবেশ করলে নাকে আসে কাঁঠালের মিষ্টি ঘ্রাণ। চোখে পড়বে কাঁঠালের উৎসব। গাছ থেকে কাঁঠাল কাটা হচ্ছে। তা এনে জড়ো করা হচ্ছে সড়কের পাশে। সেখান থেকে পিকআপ ভ্যান যোগে কাঁঠাল চলে যাচ্ছে বিভিন্ন বাজারে।
এ ছাড়া পাহাড়ের পাশের বিভিন্ন বাজারেও বসছে কাঁঠালের বাজার। চন্ডীমুড়া, রতনপুর, লালমাই ও বিজয়পুর বাজার কাঁঠালের ক্রেতা বিক্রেতায় এখন সরগরম।
সূত্রমতে, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, সদর, বরুড়া ও বুড়িচং উপজেলায় লালমাই পাহাড়ের অবস্থান। তবে বেশি অংশ সদর দক্ষিণে পড়েছে। পাহাড়ের সালমানপুর, জামমুড়া, হাতিগাড়া, বিজয়পুর, রতনপুর, রাজার খোলা, চৌধুরী খোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি কাঁঠাল উৎপন্ন হয়।
পাহাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে লালমাই পাহাড়ে একটি সড়ক প্রবেশ করছে। প্রথমে সালমানপুর। এখানে সড়কের মোড়ে বাগান ক্রয় করা পাইকার কাঁঠাল নিয়ে অপেক্ষা করছেন। পাইকার মিজানুর রহমান অপেক্ষায় আছেন কাঁঠালের পাইকারি ক্রেতার।
পাহাড়ের গা বেয়ে একটু বামে গেলে জামমুড়া এলাকা। পাহাড়ের ঢালুতে এখানে কয়েক ভাগে কাঁঠালের উৎসব বসেছে। কেউ বাগান থেকে কাঁঠাল কাটছেন। কেউ পাইকারকে কাঁঠাল বুঝিয়ে দিচ্ছেন। পাইকার গাড়িতে কাঁঠাল তুলছেন। নগদ টাকায় কাঁঠাল বিক্রি করে খুশি বাগান মালিকরা। চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। এমন হাঁকডাক শোনা যায় পুরো পাহাড়েই।
জামমুড়া এলাকার বাগান মালিক আমির হোসেন বলেন, এখানে কয়েক ধরনের ক্রেতা-বিক্রেতা আছেন। এখানে ব্যক্তি উদ্যোগে পাহাড়ে-ঢালুতে কাঁঠাল বাগান করা হয়। ফল আসার পর পাইকার কাঁঠাল বাগান ক্রয় করেন। তারা আবার ফল পাকার পর আরেক পাইকারের কাছে বিক্রি করেন। কয়েক হাত হয়ে কাঁঠাল বাজারে আসে। তার ২৫/৩০টি গাছ আছে। তিনি কাঁঠাল কেটে এনে পাইকারের কাছে সরাসরি বিক্রি করছেন। বড় জাতের কাঁঠাল প্রতিটি ১০০/১২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
ওই এলাকার বাগান ক্রয় করা পাইকার রুস্তম হোসেন বলেন, তিনি ১০ বছর ধরে কাঁঠাল বাগান ক্রয় করেন। এবার ২৫০টি গাছের বাগান ক্রয় করেছেন। এখানে ২ হাজার ৬০০ কাঁঠাল আছে। মাঝারি সাইজ ৬৫ টাকা এবং ছোটগুলো ২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তাই এবার লাভ কম হবে। ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে বাগান কিনেছেন। ইতিমধ্যে ৬০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছেন। আশা করছেন মোট দেড় লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করতে পারবেন।
কাঁঠালের খুচরা বিক্রেতা জাকির হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। তিনি থাকেন কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুরে। তিনি জামমুড়া থেকে ১০০ কাঁঠাল ৯ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। আশা করছেন এই কাঁঠাল ফেরি করে বিক্রি শেষে খরচ বাদে তার ২ হাজার টাকা লাভ থাকবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, জেলায় ৩৩৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়। তার মধ্যে লালমাই পাহাড় এলাকায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়। পাহাড়ে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপন্ন হয়। এ পাহাড়ের কাঁঠাল স্বাদে অনন্য। তাই এর চাহিদা বেশি। কাঁঠালের চাষ ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত হাজারো মানুষের এ সময় বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC