দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানি ও ফাঁদে ফেলে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদেরকে পাসপোর্ট দালাল চক্রের সদস্য বলছে র্যাব।
গতকাল রোববার (২৩ জুন) দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি ২ কুমিল্লার একটি দল পাসপোর্ট অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ সিপিসি ২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মাহমুদুল হাসান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ এলাকার মো. ফজল (৪৩), একই এলাকার মো. ওমর ফারুক (৩৫), কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইউড়া এলাকার মো. আলমগীর হোসেন (৬০), রাজাপুর এলাকার ফয়সাল আহমেদ (২১) এবং কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকার মো. জনি (২২)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানিয়েছে, দালাল চক্রের সদস্যকে পাসপোর্ট করতে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার পরেও যথাসময়ে পাসপোর্ট পায়নি মর্মে র্যাবের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন একজন ভুক্তভোগী। এ সকল অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে।
পরে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালি মডেল থানাধীন নোয়াপাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দালাল চক্রের সদস্যদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে পাসপোর্ট দালাল চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় পাসপোর্ট দালাল চক্রের হেফাজত থেকে ৯৭টি ডেলিভারি স্লিপ, ১০টি পাসপোর্ট চালানসহ পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে গ্রেপ্তাররা পাসপোর্ট দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার নামে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন বলেও স্বীকার করেছেন তারা।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, এই চক্রের সদস্যরা বাড়তি টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীদের অনলাইন আবেদন ও ব্যাংক ড্রাফট করে দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুতসময়ে পাসপোর্ট করে দিবে বলে ডেলিভারি স্লিপ নিজেদের কাছে রেখে দিত। পরে চক্রটি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পাসপোর্ট ডেলিভারি করার নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করত।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।