
কুমিল্লার সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পুশইন ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। বিজিবি-১০ ব্যাটালিয়ন পুশইন ছাড়াও অন্যান্য অপরাধ দমনে সীমান্তজুড়ে টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে।
গতকাল শনিবার (১৭ মে) কুমিল্লার বিবির বাজার ও গাজীপুর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কোতয়ালী থানার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বিবির বাজার, কটকবাজার, গোলাবাড়ি ও শাহাপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা সক্রিয়ভাবে টহল দিচ্ছেন। সড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি করা হচ্ছে।
এ সময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা জানান, সীমান্ত এলাকায় কোনোভাবেই যাতে পুশইন ঘটতে না পারে, সে জন্য তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, ভারতীয়দের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পুশইন প্রতিরোধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বালুজুরী বিজিবি বিওপি ক্যাম্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল রেজাউল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, সীমান্তবর্তী যেসব স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেখান থেকে কোনো তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ রাহুল জানান, পুশইন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনো পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বা ভারতীয় নাগরিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
বিবির বাজার স্থলবন্দর সীমান্ত পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মো. রাসেল জানান, এ এলাকায় এখনো পর্যন্ত কোনো অবৈধ ভারতীয় নাগরিক বা রোহিঙ্গা প্রবেশ করেনি। বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা ১০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর আলী এজাজ সাংবাদিকদের জানান, কুমিল্লা সীমান্তের কোথাও এখনো পুশইনের চেষ্টা ঘটেনি। তবে পুশইন ঠেকাতে সতর্ক থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগের চেয়ে বিজিবি টহল দ্বিগুণ করা হয়েছে। আনসার সদস্যদেরও বিভিন্ন স্থানে কাজে লাগানো হয়েছে। সীমান্তের প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে এবং ক্যাম্পেইন চালানো হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মসজিদের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করে স্থানীয়দের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পুশইন ঠেকাতে আরও বিভিন্ন প্রস্তুতি রয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় যেন কোনো উত্তেজনা না ছড়ায়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিজিবি সূত্রমতে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সংলগ্ন কুমিল্লা ১০ বিজিবির প্রায় ৯৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সীমান্ত এলাকায় এখনো পর্যন্ত অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে গোলাবাড়ি সীমান্তে গোমতী নদীতেও।