জুলাই ৫, ২০২৫

শনিবার ৫ জুলাই, ২০২৫

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে আগুনে পুড়লো অন্তত ১০ দোকান, কোটি টাকার বেশি ক্ষতি

Rising Cumilla -At least 10 shops gutted in fire in Burichang, Comilla, causing damage worth over a crore taka
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বারেশ্বর ফরিদ উদ্দিন ডাক্তার মার্কেটে শুক্রবার রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এতে অন্তত ১০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মার্কেটের মাহবুবের ফলের দোকান এবং আবু খায়েরের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন দ্রুত আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বুড়িচং ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এবং স্থানীয় জনসাধারণ প্রায় দুই ঘণ্টার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে:
* আবু খায়ের ট্রেডার্স: গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা ও নগদ টাকা মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
* মাসুদ স্টোর: প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
* মহসিন ট্রেডার্স: ১৫০ বস্তা চাল ও সারসহ প্রায় ৭ লাখ টাকা।
* সুমন স্টোর: ক্রোকারিজ ও মুদি মালামাল মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকা।
* কামরুল হাসানের মেকানিক্যাল ফ্রিজ মেরামত দোকান: ৩ লাখ টাকা।
* হাসান ভূঁইয়া ইলেকট্রনিক্স: ১০ লাখ টাকা।
* চন্দন শীলের সেলুন: ৩ লাখ টাকা।
* মনির হোসেনের হোমিওপ্যাথিক দোকান: ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
* প্রতিবন্ধী মিজান ও বজলু মিয়ার ইলেকট্রনিক্স দোকান: প্রায় ৫ লাখ টাকা।
* মারিয়া খেলা ঘর এন্ড ফ্যাশন: ৬ লাখ টাকা।
* ইকবাল কনফেকশনারীসহ অন্যান্য দোকান: প্রায় ৫ লাখ টাকা।

প্রত্যক্ষদর্শী গোলাম কিবরিয়া ও কাউছার নয়ন জানান, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে গ্যাসের দোকান, পাইকারি চাল ও সারের দোকান, খেলার সামগ্রীর দোকান, ক্রোকারিজ, ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের দোকান ছিল।

ফল ব্যবসায়ী মাহবুব, যিনি ২৫ বছর ধরে এই মার্কেটে ব্যবসা করছেন, জানান, “ঘটনার সময় আমি কুমিল্লা শহরে ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখি আমার লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”

প্রতিবন্ধী মিজান, যার দুটি পা নেই, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ইলেকট্রনিক্স মেরামত করে কোনমতে সংসার চলতো। এখন দোকানটিও শেষ। স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে বাঁচবো কিভাবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা দরকার।”

বুড়িচং ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন জানান, তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। তিনি নিশ্চিত করেন যে ১০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পরে জানানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর তালিকা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন