কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার বারপাড়ায় আবারও এক নির্মাণ শ্রমিককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আল আমিন নামে এক নির্মাণ শ্রমিককে নির্যাতনের একটি ভিডিও শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টম্বর) জেলার আদর্শ সদর উপজেলার বারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার যুবক বারপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় চারজনের নামে থানায় মামলা করেছেন তিনি। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালী থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার বারপাড়া গ্রামের মো. আশিকের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন আল আমিন। শুরুতে দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি ধার্য করে কাজ শেষে তাকে ৫০০ টাকা দেন আশিক। এতে আল আমিন আর কাজ করবেন না বলে জানান। পরে আশিক ও তার ভাই হাফিজ, একই গ্রামের মো. সজল ও বারপাড়া কৃষ্ণপুর গ্রামের নয়নসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজন মিলে বুধবার সকালে শ্রমিক আল আমিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। আশিকের বাড়ি নিয়ে আল আমিনকে যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে লোহার প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের আঙুলের নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করে এবং হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এরইমধ্যে নির্যাতনের একটি ভিডিও শনিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, ওই নির্মাণ শ্রমিককে গাছে বেঁধে রড ও লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে কয়েকজন। এ সময় সে ‘পানি পানি’ বলে এবং ‘চুরি করি নাই’ বলে চিৎকার করছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আল আমিন বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। ন্যায্য মজুরি না পেয়ে কাজ না করার কথা বললে আমাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি। আশা করি, ন্যায়বিচার পাব।’
নির্যাতনের শিকার আল আমিনের মামা মো. সোহেল জানান, এ ঘটনার সময় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা হলে চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার ঘটনাস্থলে আসেন। পরে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এরআগে ২৭ আগস্ট কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার চোত্তাপুকুরিয়া গ্রামে চুরির অপবাদে আবদুল হান্নান নামে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম।
অপর দিগে ৭ সেপ্টেম্বর মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা গ্রামের মনির হোসেন মৃধার বাড়ির নলকূপ চুরির অভিযোগে রাসেল মিয়া নামে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলমসহ অন্যরা।
উভয় ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয় এবং সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক মামলা হয়।