‘গাছ পাকা ফল, গাছ পাকা ফল’—এভাবে হাকডাক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন মৌসুমি ফল বিক্রেতা নাজমুল। নারায়ণগঞ্জের লিচু আর গাজীপুরের আম বিক্রি করছিলেন তিনি।
ক্রেতারাও দর কষাকষি করে কিনছিলেন। কেউ আবার দেখে অন্য দোকানে ছুটছিলেন।
কুমিল্লায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছে মৌসুমী ফল। আড়ত থেকে শুরু করে খুচরা বাজার এমনকি অলিগলি থেকে মহাসড়ক সর্বত্রই আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারসসহ বিভিন্ন দেশীয় রসালো ফলে ভরপুর। ক্রেতা আকর্ষণে হাঁকডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। কুমিল্লার প্রতিটি বাজারে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদেরও রয়েছে উপচে পড়া ভিড়।
দেশি ফলের প্রাচুর্যের কারণে বিদেশি ফলের চাহিদা এখন কিছুটা কম। দেশি ফলের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে ফল ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই ট্রাক ভর্তি মৌসুমী ফল কুমিল্লাতে আসছে। এতে প্রতিদিন দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার ফল বেচাকেনা হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মৌসুমী ফলে ভরপুর হয়ে উঠেছে শহরের রাজগঞ্জ বাজার, বাদশা মিয়ার বাজার, টমছম ব্রীজ ও রাণীর বাজার ফলের আড়ত। এসব আড়ত ও দোকানে উঠেছে বিভিন্ন জাতের আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, কামরাঙা, আনারস, জামরুল, ডালিম, কাঁচা তাল, লটকন, কলাসহ নানা রকম ফল। এর মধ্যে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ১২০ টাকা। জামরুল, জাম ও লটকন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লিচু প্রতি শত ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে আকারভেদে প্রতিটি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, আনারস প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা তাল প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকা, পেয়ারা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন বলেন এ বছর ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে ফলের দাম। তিনি বলেন, এ মৌসুমে দেশি ফলের বিকল্প নেই। গ্রীষ্মের দেশি ফল যেমন সুস্বাদু, তেমনি রসেও ভরপুর। তাই এ মৌসুমে দেশি ফলের অনেক চাহিদা রয়েছে। এখন প্রায় সব মৌসুমী ফলই বাজারে আছে। শুরুতে দাম কিছুটা চড়া থাকলেও ক্রমেই তা কমছে। ফরমালিনের কোনো আশঙ্কা নেই। বাজারেও ফলের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। ক্রেতারা ন্যায্য দামেই ফল কিনতে পারবেন।
বাদশা মিয়া বাজারে মৌসুমী ফল কিনতে আসা মো. সোলেয়মান বলেন, বাজারে দেশীয় সব ধরনের ফল পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারের জন্য ফল কিনতে এসেছি। বাজার ঘুরে মনে হলে এ বছর সব ফলেরই দাম কিছুটা কম। তিনি বলেন, মৌসুমিী ফল খাওয়াটা খুব জরুরি। তাই ফল কিনে বাড়ি ফিরছি।
এদিকে মৌসুমি ফলের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। ফল বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে ফল কেবল আসতে শুরু করেছে, অন্যদিকে তেলের দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের খরচও। এ কারণে ফলের দাম বেড়েছে। তবে ঈদের আগে থেকে ক্রমেই ফলের সরবরাহ বাড়ছে।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC