
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোনো প্রকার বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, কৃষক, এবং শিক্ষার্থীরা। এদিকে, মৌসুমের সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো ধান নিয়ে শঙ্কিত কৃষকেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ ও খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে গড়ে প্রায় ৬-৭ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকেনা। বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করতেই থাকে। এই লোডশেডিংয়ের কারণে বিপাকে পড়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীগণ। বিদ্যুতের আসা যাওয়া এবং লোডশেডিংয়ের কারণে বাড়ি-ঘরের ইলেকট্রনিক পণ্যসহ বিভিন্ন খাবার পণ্যসামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। প্রচন্ড দাপদাহের মধ্যে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ী, খামারিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ব্যাঘাতসহ উপজেলা সদরসহ গ্রামাঞ্চলে প্রচন্ড গরমে এলাকাবাসী ঘুমাতে পারেন না। অনেককে রাতে ঘন্টার-পর ঘন্টা বিদ্যুতের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়।
অপরদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে মৌসুমের সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো ধান নিয়ে শঙ্কা রয়েছে কৃষকেরা। সেচকাজ ব্যাহত হওয়ায় ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এ সময়ে জমিতে পানি না থাকলে ধান চিটা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
নাঙ্গলকোট পল্লী বিদ্যুৎ ডিজিএম কামাল পাশা এ বিষয়ে জানান, ‘কুমিল্লা ও ফেনী গ্রেড থেকে নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎ আসে। আর এ নাঙ্গলকোটে ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎতের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে পাচ্ছি ১০-১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তাই লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি এই দুর্ভোগ কমাতে।’
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ সময় বোরো ধানের জমিতে পানি না থাকলে ধান চিটা হওয়ার সম্ভব না থাকে। তাই পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলা হয়েছে যাতে রাতের বেলায় লোডশেডিং একটু কম করে। পাশাপাশি জমিতে নিয়মিত ছত্রাক নাশক ঔষধ ব্যবহর করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ ৪ এর জিএম মো. জাকির হোসেন এ বিষয়ে জানান, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ-৪ এর আওতায় ৩ লাখ গ্রাহক রয়েছে। তাদের বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে ৭২ মেগাওয়াট। বর্তমানে আমরা পাচ্ছি ৩৫-৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তাই একটু লোডশেডিং হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে এ লোডশেডিং আর থাকবে না। গরম ভাড়ার কারণে এমনটা হয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তারজন্য কাজ করছি।
এ বিষয় গোমকোট গ্রামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘যদি লাইনে কোনো সমস্যা থাকত, তাহলে একেবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকত। লাইনে কোনো সমস্যা নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’