আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পূর্ণ হলো। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে পতন হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
এরমধ্য দিয়ে দেশে নতুন করে স্বাধীনতা ফিরে আসে। আর ছাত্র-জনতার অধিকার আদায়ের এই সম্মিলিত লড়াইয়ে তাদের সাথে একই কাতারে দাঁড়িয়েছিল এদেশের শিশু-কিশোররাও।
তারা সম্মিলিতভাবে মানুষের হৃদয়ে বিপ্লবী কম্পন তৈরি করার জন্য কবিতা, গান, পোস্টার, কার্টুন আর গ্রাফিতি এঁকেছেন দেশের প্রতিটি দেয়ালে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে বিশ্বের বুকে এ দেশের ছাত্র-জনতা আরও এক উদাহরণ তৈরি করেন। এই আন্দোলনের সহিংসতায় প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে পুরো আন্দোলনকে ঘিরে দেশের প্রতিটি শহরে-গ্রামে গ্রাফিতি এঁকেছেন শিক্ষার্থী ও শিল্পীরা। এরই অংশ হিসেবে নতুন করে সেঁজেছে কুমিল্লার শহর ও গ্রামের অগোছালো দেয়ালগুলো। পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে মৃত্যুকে বরণ করে নেয়া রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। আন্দোলনের নানান স্লোগান, আন্দোলনের নানান চিত্র, রাষ্ট্র সংস্কারের গ্রাফিতি, অসাম্প্রদায়িক বাংলার নানান দৃশ্য এখন ছড়িয়ে দিয়েছেন দেয়ালে দেয়ালে। সড়কে চোখ মেললেই নতুন বাংলাদেশের প্রতিবাদ কাব্য ফুটে উঠে।
কুমিল্লার মহানগরী ও উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের কাঁচা হাতের লেখা আর আলপনাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া ছাত্র-জনতার স্মৃতি ও বিজয়ের চিহ্ন ভেসে উঠেছে শহর ও গ্রামের অলিগলির দেয়াল গুলোতে। ‘পানি লাগবে পানি’, ‘স্বাধীন করেছি, সংস্কারও করবো’, ‘আমিই বাংলাদেশ’,আমার ভাইকে ফেরত দে, ‘শেখ হাসিনা পালায় না’, দ্বিতীয় স্বাধীনতা ৩৬ শে জুলাই”। এসব অসংখ্য লিখনী ও চিত্রাঙ্কনে ভরে গেছে গোটা দেশ। প্রতিটি দেয়াল এখন রং তুলির রঙে রঙিন।
কুমিল্লার এই সব গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি আন্দোলনের জুলাই-আগস্টের পুরো চিত্র। যে চিত্রে চোখ বুলালেই দৃশ্যমান হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়।