
গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় গোমতী নদীর উপর নির্মিত একটি ৭৫ মিটার দীর্ঘ কাঠের সেতু পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়েছে। এর ফলে নদীর দুই পাড়ের ৪৩টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে আসমানিয়া বাজার ও নারান্দিয়া গ্রামের মধ্যে গোমতী নদীর ওপর এই কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি নদীর উত্তর-পশ্চিম পাড়ের নারায়ণপুর, হরিপুর, রতনপুর, কদমতলী, নারান্দিয়া, তারিয়াকান্দি, তুলাতলী, তুলাকান্দি, বলরামপুর, মাছিমপুর, কলাকান্দি, দাসকান্দি, হারাইকান্দি, ভাটিবন, নয়াকান্দি, সোনাকান্দা, চরেরগাঁও, দড়িকান্দি, দুলারামপুর, হাইদনকান্দি, মানিককান্দি, জগৎপুর, খানেবাড়ি গোবিন্দপুর, বাতাকান্দি, আকালিয়া, উত্তর আকালিয়া, কালাইগোবিন্দপুর, ঐচারচর, রঘুনাথপুর গ্রাম এবং দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ের খলিলাবাদ, কাশিপুর, জাহাপুর, কালিপুর, সেম্বুপুর, গাজীপুর, সাতানি, নয়ানি, কাশিপুর, নয়াচর, দক্ষিণ নারান্দিয়া, আসমানিয়া ও খোশকান্দি গ্রামের বাসিন্দাদের সহজ যোগাযোগের মাধ্যম ছিল।
সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুই পাড়ের গ্রামগুলোতে সাধারণ জনগণ চরম বিপাকে পড়েছেন। বর্তমানে তাদের প্রায় চার কিলোমিটার পথ ঘুরে দাসকান্দি হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে এখনো নৌকা বা ট্রলার চলাচল শুরু হয়নি।
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, “নদীতে এখনো প্রবল স্রোত রয়েছে। ফলে মেরামতের কাজ সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমলে সেতুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
আসমানিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আহমেদ আলী বলেন, “এই সেতুটা আমাদের এলাকার মানুষের জন্য একটা জীবনরেখা ছিল। এখন চার কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে, এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে। বর্ষাকালে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে, এটা ভাবিনি।”
নারান্দিয়া গ্রামের একজন কলেজ শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিন কলেজে যেতে আমাদের এই সেতুই একমাত্র ভরসা ছিল। এখন এত লম্বা পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে, যা খুবই কষ্টকর। কখন আবার নতুন করে সেতু তৈরি হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত এই স্থানে একটি স্থায়ী এবং মজবুত সেতু নির্মাণ করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। একই সাথে জরুরি ভিত্তিতে সাময়িক চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থারও দাবি জানিয়েছেন তারা।