সোমবার ২১ জুলাই, ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনায় বাড়িঘরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের রুল

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার টাটেরা গ্রামের ‘সমাজচ্যুত’ এক ব্যক্তিকে কোরবানির মাংস দেয়ায় মাংস বিতরণকারীর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকাল উচ্চ আদালত ওই রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।

রিটকারী আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন বলেন, প্রায় চার বছর আগে সমাজের জন্য নির্দিষ্ট করা মসজিদে নামাজ আদায় নিয়ে চান্দিনা উপজেলার টাটেরা গ্রামের আব্দুল হালিমের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় সমাজপ্রধান আলী আহাম্মদের বিরুদ্ধে। এরপর গত ঈদুল আজাহার দিন আব্দুল হালিমের পরিবারকে কোরবানির মাংস বিতরণ করে ইব্রাহিম খলিল নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। আব্দুল হালিম ও ইব্রাহীম খলিল সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই হন। এর পরদিন ‘সমাজচ্যুত’ আব্দুল হালিমকে মাংস বিতরণ করায় ইব্রাহিম খলিলের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে আলী আহাম্মদ, তার দুই ছেলে ফয়েজ আহাম্মদ ওরফে সোহেল, ফিরোজ আহাম্মদসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন।

পরে এ ঘটনায় গত ৯ জুন চান্দিনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ইব্রাহিম খলিল। এরপর সমাজপতি আলী আহাম্মদের লোকজন ইব্রাহিম খলিলকে ক্রমাগত মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। হুমকির ভয়ে ইব্রাহিম খলিলের পরিবার এখন বাড়িতে ফিরতে পারছে না।

এ ঘটনায় গত ১২ জুন কুমিল্লার ডিসি, এসপি ও চান্দিনার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ইব্রাহিম খলিল। এ বিষয়ে একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন- সমাজচ্যুত পরিবারকে কোরবানির মাংস বিতরণ করায় মাংস বিতরণকারী পরিবারের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিসি, এসপির কাছে আবেদন করেও কোন সাড়া পাচ্ছেন একটি পরিবার। বিষয়টি জনস্বার্থ বিবেচনায় স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২৯ জুন হাইকোর্টে রিট করি।

তিনি আরও বলেন, আজ আমি ওই রিটের পক্ষে নিজেই শুনানি করি। শুনানি শেষে আদালত রুল জারির পাশপাশি এ ঘটনায় কুমিল্লার ডিসি, এসপি, ইউএনও বরাবরে করা আবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে রুল জারি করেছেন।

ভূক্তভোগী ইব্রাহীম খলিল জানান- আমার উপর এ অমানবিক ঘটনার পর চান্দিনায় কর্মরত সাংবাদিকরা জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজপোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করায় উচ্চ আদালতের একজন আইনজীবীর নজরে আসে। তিনি জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনটি দায়ের করেছিলেন।

আরও পড়ুন