কুমিল্লার খাদি কাপড়। এক নামেই খ্যাতি রয়েছে দেশ-বিদেশে। এবার দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করা কুমিল্লার এই খাদি সহ নতুন করে বিভিন্ন অঞ্চলের মোট ২৪টি দেশীয় পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধন সনদ লাভ করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জিআই পণ্য এখন ৫৫টি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, জামদানি শাড়ি দেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এরপর একে একে আরও ৫৫টি পণ্য এই তালিকায় যুক্ত হলো।
তিনি আরও বলেন, জিআই পণ্যগুলো আমাদের দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখে। এই পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িতদের ন্যায্য অধিকার ও পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এর মাধ্যমেই স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং উৎপাদনকারীরা আরও শক্তিশালী হবেন।
শিল্প উপদেষ্টা এই সময় জিআই পণ্যের তালিকা আরও সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি সেগুলোর বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অনুষ্ঠানে সংগীতের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গান বাংলাদেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমেই তাদের আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ করে, যা দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংগীত নিয়ে একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং খুব শীঘ্রই দেশবাসী তা দেখতে পাবে। তিনি সংগীতের কপিরাইট সুরক্ষার ওপরও জোর দেন।
এবারের অনুষ্ঠানে যে নতুন ২৪টি পণ্য জিআই সনদ লাভ করেছে, সেগুলো হলো – কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ।
অনুষ্ঠানে এই জিআই সনদপত্র বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক এবং নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই স্বীকৃতি স্থানীয় উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এরআগে নিবন্ধিত ৩১টি জিআই সনদ লাভ করা পণ্য হলো- টাঙ্গাইল শাড়ি, জামালপুরের নকশিকাঁথা, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, রাজশাহীর মিষ্টি পান, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, যশোরের খেজুরের গুড়, মুক্তাগাছার মণ্ডা, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মৌলভীবাজারের আগর, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, কুমিল্লার রসমালাই, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, চাঁপাই নবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম, চাঁপাই নবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, বগুড়ার দই, বাংলাদেশের শীতল পাটি, বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, বাংলাদেশের কালিজিরা, দিনাজপুরের কাটারীভোগ, বিজয়পুরের সাদা মাটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, বাংলাদেশের ইলিশ এবং জামদানি শাড়ি।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC