কুমিল্লায় উপমহাদেশের সঙ্গীতজ্ঞ সুর সম্রাট শচীন দেব বর্মণের ১১৮তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে নগরীর চর্থা এলাকায় নিজ বাড়িতে স্থাপিত শচীন দেব বর্মণের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আমিরুল কায়ছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া, জেলা কালচারাল অফিসার সৈয়দ আয়াজ মাবুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. গোলাম ফারুক, প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শচীন দেববর্মনের ম্যুরালে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মো.আমিরুল কায়ছার বলেন, শচীন দেব বর্মণের বাড়ি ও তার ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
উল্লেখ্য, শচীন দেব বর্মণ ছিলেন একাধারে জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, গায়ক ও লোকসঙ্গীত শিল্পী। সঙ্গীত জগতে তিনি এসডি বর্মণ হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। একশো বছর পার হওয়ার পরও বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে তার কালোত্তীর্ণ গানের আবেদন একটুও কমেনি।
ত্রিপুরার বিখ্যাত চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের নয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তার বাবা নবদ্বীপ চন্দ্র দেববর্মণ ছিলেন একজন সেতারবাদক এবং ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী। আর মা মণিপুরি রাজবংশের মেয়ে নিরুপমা দেবী।
জানা যায়, ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন সুর সম্রাট শচীন দেব বর্মণ। তার বাবা নবদ্বীপ কুমার বর্মণ ১৮৭০ সালের মাঝামাঝি সপরিবারে কুমিল্লা এসে বসতি স্থাপন করেন। শচীন দেব বর্মণ কুমিল্লায় ছিলেন ১৯২৪ সাল পর্যন্ত। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং ওই কলেজ থেকে আইএ পাস করেন শচীন দেববর্মণ।
পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কলকাতা চলে আসেন এবং ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলকাতায় লেখাপড়া করার সময়ই তিনি গায়ক হিসাবে পরিচিতি পান।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে অল ইন্ডিয়ান মিউজিক কনফারেন্সে তিনি গান গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে বেঙ্গল মিউজিক কনফারেন্সে ঠুমরি পেশ করে ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁকে মুগ্ধ করেছিলেন। শেখ ভানুর লেখা ‘নিশিথে যাইয়ো ফুলবনে’ দেহ ও সাধনতত্ত্বের এই গানটিকে তিনি প্রেমের গানে রূপান্তর করলেন কবি জসীমউদ্দীনকে দিয়ে। তার কণ্ঠে গাওয়া গানটি রেকর্ড করা হয়েছিলো ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে যা এখনও সমান জনপ্রিয়।
তার পাওয়া পুরস্কারের মধ্যে -বেঙ্গল সর্বভারতীয় সঙ্গীত সম্মেলনে স্বর্ণপদক, সঙ্গীত নাটক একাডেমি অ্যাওয়ার্ড এশিয়া ফিল্ম সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড, সেন্ট হরিদাস অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য।
এই কালজয়ী সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর প্যারালিটিক স্ট্রোক হয়ে মারা যান।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC