কুমিল্লা শহরের আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে গ্রাম। শহরের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামেও। বদলে গেছে গ্রামীণ জীবন। গ্রামের রাস্তাঘাট উন্নয়ন হলে শহরের সব সুবিধা পাওয়া যায় গ্রামে।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের নাম পিপুইয়া। পাঁচ বছর আগেও ওই গ্রামের ৮০ ভাগ রাস্তা ভাঙ্গা ছিলো। বর্ষায় সময় ভাঙা রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়তো। গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে রোগী ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুভোর্গের শেষ ছিলো না। বর্তমানে পিপুইয়া গ্রামের ৯০ ভাগ সড়ক পাকা হওয়ায় পাল্টে গেছে ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। সরকারের স্থায়িত্বে উন্নয়নের সুফল প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে আর ক্রমশ বদলে যাচ্ছে সবকিছু।
পিপুইয়া গ্রামের ভূমিহীন-গৃহহীনরা সরকারের দেওয়া বিনা পয়সায় ঘর পাচ্ছে। সরকার গৃহীত নানা প্রকল্পের কারণেই বদলে গেছে মানুষের জীবন যাত্রা। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। গ্রামে সহজে বাজারজাত করা যাচ্ছে। পাশের গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত যেতে পারছে শিক্ষার্থীরা। এতে পিপুইয়া গ্রামের চিত্র পাল্টে গেছে।
পিপুইয়া গ্রামের মো. মনির হোসেন বলেন, এলাকার উন্নয়ন তথা রাস্তাঘাটের জন্য মানুষের নানা ধরনের কাজ বেড়েছে। এতে আয়ও বেড়েছে। নানা ধরনের আয়বর্ধক কাজে জড়িত হয়ে সবাই এখন অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল। তিনি আরো বলেন, রাস্তা ভালো হওয়ায় এলাকার ছেলেমেয়ে সহজে স্কুলে যেতে পারে। যারা অন্যের জমিতে কাজ করতেন তাদের অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা বা বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করছেন। কেউ কেউ অটোরিকশা ভাড়ায় চালিয়েও জীবিকা নির্বাহ করছেন।
গ্রামের বাসিন্দা পিপুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শাহআলম বলেন, এক সময় এ গ্রামের সড়কের বেহাল অবস্থা ছিলো। খুব প্রয়োজন না হলে স্বজনরাও এ গ্রামে আসতেন না। বর্তমান সরকারের উন্নয়নে পরিকল্পনায় এ গ্রামের সড়কগুলো উন্নত হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামের প্রতিটি সড়কে। আশা করছি বর্তমানে চলমান কাজগুলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে শুহিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে শুহিলপুর ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। গ্রামাঞ্চলের অনেক রাস্তাঘাটের পরিবর্তন হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জীবিকা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা তথা মানবসম্পদ উন্নয়নসহ গ্রামীণ অবকাঠামোর আমুল পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, পল্লী সড়ক উন্নয়ন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত প্রকল্প। পুরুষদের পাশাপাশি স্বাবলম্বী এখন গ্রামের নারীও। স্বল্পসুদে বা বিনাসুদে ঋণ নিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি নানা ধরনের আয়বর্ধক কাজে জড়িত হচ্ছেন নারীরা। এতে সংসারের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যেমন হচ্ছে তেমনিভাবে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি।