কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আয়োজনে বিদেশ ফেরত ৫০ অসচ্ছল অভিবাসী কর্মীর সন্তানদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক খন্দকার মুঃ মুশফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সম্মেলন কক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীর প্রত্যককে ১টি ব্যাগ, ১টি ক্যালকুলেটর, ৬টি খাতা, ১ ডজন কলম, ১ ডজন পেন্সিল, ১টি জ্যামিতি বক্স এবং ১টি স্কেল দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক খন্দকার মুঃ মুশফিকুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের গুরুত্ব আলোচনা করেন। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স না পাঠিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর আহবান জানান তিনি।
কাজ ও ভাষা শিখে বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দেন। বিমান বন্দরে আনুষ্ঠানিকতা, আর্থিক স্বাক্ষরতা, মানব পাচার, উচ্চ অভিবাসন ব্যয়, দালালদের দৌরাত্ন নিয়ে কথা বলেন তিনি। প্রবাসীদের কল্যাণে ও স্বার্থ রক্ষায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নানামূখী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বিশেষ অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান এবং সভাপতি ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক দেবব্রত ঘোষ।
বিশেষ অতিথি কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বিদেশ যাবার আগে যেকোন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ গেলে বেতন যেমন বেশি পাওয়া যায় আবার চাকরি স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তিনি জানান, টিটিসিতে পরিচালিত অধিকাংশ কোর্স করতে তেমন কোন টাকা খরচ হয় না বরং অনেক কোর্স আছে যেখানে প্রশিক্ষণার্থীরা কোর্স শেষে প্রায় ১০ হাজার টাকা পায়। বিদেশ ফেরতদের জন্য আরপিএল সুবিধা রয়েছে। অনুষ্ঠানের সভাপতি দেবব্রত ঘোষ জানান, কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিদেশগমনেচ্ছু, বিদেশগামী এবং বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার সুরক্ষা এবং সার্বিক কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। মানব পাচার, উচ্চ অভিবাসন ব্যয়, দালালদের দৌরাত্ন ও প্রতারণা রোধে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে ব্যাপক প্রচারণা অব্যাহত আছে।
তিনি জানান, প্রাক-বহির্গমন অরিয়েন্টেশনে অংশগ্রহণকারি বিদেশগামী কর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতায় ৫০ অসচ্ছল অভিবাসী কর্মীর সন্তানদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। প্রবাসীদের কল্যাণে নতুন নতুন উদ্ভাবনী উদ্যোগ চলমান থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অতীশ সরকার, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ম্যানেজার আরিফুর রহমান চৌধুরী, অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের কাউন্সেলর ইকবাল হোসেন, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রতিনিধি, রামরু’র প্রতিনিধি, ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, সিসিডিএ প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকসহ ১০০ জন বিদেশগামী অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
ভিন্নধর্মী উদ্যোগের আয়োজনের জন্য জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক দেবব্রত ঘোষকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক খন্দকার মুঃ মুশফিকুর রহমান।