কোটি টাকা খরচ করেও ঠেকানো যাচ্ছে না বজ্রপাতে প্রাণহানি। বিগত সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তিন বছর আগে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলে স্থাপিত ব্যয়বহুল বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্রগুলো এখন অকেজো। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যন্ত্রগুলো কোনো কাজে আসছে না।
সুনামগঞ্জের ছয়টি উপজেলার প্রত্যন্ত হাওর এলাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮টি লাইটনিং অ্যারেস্টার মেশিন স্থাপন করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বজ্রপাত কবলিত এলাকায় প্রাণহানি কমানো। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, এই যন্ত্রগুলো ১০০ মিটার ব্যাসের মধ্যে বজ্রপাত হলে তা টেনে মাটিতে নামিয়ে আনবে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। অযত্ন আর অবহেলার কারণে মূল্যবান এই যন্ত্রগুলো এখন অকার্যকর।
একই অবস্থা হবিগঞ্জেও। পাঁচ বছর আগে জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি বজ্র নিরোধক যন্ত্র বসানো হয়েছিল। কিন্তু এখানেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো এখন অকেজো পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানান, যন্ত্রগুলো বসানোর পর থেকে তারা কোনো উপকার পাননি।
এ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, "কোটি টাকা খরচ করে মৌলভীবাজারের ১০টি উপজেলায় বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হলেও সেখানে প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানো যাচ্ছে না।"
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানান, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৫৯ শতাংশ এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ বজ্রপাত হয়ে থাকে। তবে এপ্রিল, মে ও জুন মাসেই সবচেয়ে বেশি (প্রায় ৭০ ভাগ) বজ্রপাত সংঘটিত হয়। তাই ঝড় শুরু হওয়ার আগেই খোলা স্থান ত্যাগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ডিজাস্টার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ১৪ বছরে বজ্রপাতে চার হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘের হিসেবে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা যান।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC