
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের খামার এবার তাক লাগাতে প্রস্তুত। তার পরম যত্ন আর ভালোবাসায় বেড়ে উঠেছে এক ব্যতিক্রমী কোরবানির ষাঁড়, যার নাম রাখা হয়েছে ‘যুবরাজ’।
ফ্রিজিয়ান ও শাহীওয়াল জাতের এই সংকর গরুটির ওজন প্রায় ৩০ মণ এবং এর দাম হাঁকা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। জয়নাল আবেদীন আশা করছেন, দীর্ঘ তিন বছরের পরিশ্রমের ফসল এই ‘যুবরাজ’ এবার কোরবানির হাটে সাড়া ফেলবে।
চাটখিল পৌর বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার উত্তরে মির্জাপুর গ্রামে জয়নাল আবেদীনের খামারেই বেড়ে উঠেছে এই বিশালদেহী ষাঁড়। লাল-কালো মিশ্র রঙের, সুঠাম গড়ন এবং শান্ত স্বভাবের কারণে ‘যুবরাজ’ ইতোমধ্যেই স্থানীয়দের নজর কেড়েছে। জয়নাল আবেদীন জানান, গরুটির উচ্চতা ৬ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ৭ ফুট। প্রতিদিন সকাল-বিকাল দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করছে এক নজর ‘যুবরাজ’কে দেখতে।
জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, “এই গরুটাকে আমি নিজের সন্তানের মতো করে বড় করেছি। তিন বছর ধরে প্রতিদিন নিয়ম করে খাওয়ানো, গোসল করানো, পরিচর্যা করেছি। কখনো কৃত্রিম কিছু খাওয়াইনি। খৈল, ভূষি, চালের ক্ষুদ, ভুট্টা আর নেপিয়ার ঘাসেই ওকে বড় করেছি।” তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, শুধু চাটখিল নয়, পুরো নোয়াখালী জেলায় এটিই হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ষাঁড়।
আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য ‘যুবরাজ’কে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। জয়নাল আবেদীন আরও জানান, দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ক্রেতারা ‘যুবরাজ’ ক্রয় করতে পারবেন এবং তিনি নিজ খরচে গরুটি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল ইসলাম রতন ‘যুবরাজ’ সম্পর্কে বলেন, “জয়নাল ভাইয়ের গরুটি যেমন বড়, তেমনি স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর। এমন গরু আমাদের মতো গ্রাম এলাকায় সচরাচর দেখা যায় না। এবারের কোরবানির হাটে ‘যুবরাজ’ দারুণ সাড়া ফেলবে।”
চাটখিল উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. শাহাদাত হোসেনও ‘যুবরাজ’কে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “বিশালদেহী চাটখিলের ‘যুবরাজ’ নামের গরুটিকে জয়নাল আবেদীন প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করেছেন। চাটখিলের পশুপ্রেমী ও কোরবানিদাতাদের মধ্যে গরুটি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।”
কোরবানির ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ‘যুবরাজ’-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। যদি স্থানীয় হাটে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়া যায়, তবে ‘যুবরাজ’কে চট্টগ্রামের বড় কোরবানির হাটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই তিন বছরের সাধনার ফল কতটুকু পূরণ করতে পারে চাটখিলের এই গরুপ্রেমী খামারির আশা।