প্রতিবছর বিজয় দিবস এলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী, ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও বিরোধী রাজনীতিকদের অনেকেই ‘বিজয় দিবস’কে স্মরণ করেন। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও এদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। তবে ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে করা সেসব ভার্চুয়াল বার্তায় কোথাও দেখা যায় না বাংলাদেশের নাম। এমনকি মুক্তিবাহিনী, এদেশের মানুষের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের গল্পও থাকে উপেক্ষিত।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিজয় দিবসের দিনকে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বিজয় দিবসে বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানানোর বদলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতীয় সেনাদের অবদানের কথা স্বীকার করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মোদি। কিন্তু পোস্টে একটি বারের জন্যও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টানেননি তিনি।
পোস্টে মোদি লিখেছেন, ‘আজ, বিজয় দিবস। আমরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সৈন্যদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ জীবন উৎসর্গ এবং অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে।’
মোদি আরও লিখেছেন, ‘এই দিনটি তাদের অসাধারণ বীরত্ব এবং তাদের অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।’
মোদির এমন পোস্টের পর বাংলাদেশে জনমনে দেখা গিয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই বিজয়কে ভারত নিজেদের বলে দাবি করায় এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ আরও অনেকে। মোদির সেই পোস্টেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
নেটিজেনরা লিখেন, এই যুদ্ধ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। আমার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে যারা নিজেদের বিজয় দাবি করে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করবো। মোদির এই বক্তব্য আমাদের দেশের জন্য হুমকি। তার এই বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম।