বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব সেলিনা বেগম অফিস করেন নিজের ইচ্ছামতো। মনে চাইলে অফিস করেন, না চাইলে অফিস করেন না তিনি। মাসের পর মাস এভাবেই চলছেন তিনি।
রোববার (২ জুন) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে গিয়ে খালি পড়ে থাকতে দেখা যায় সহকারী পরিচালক সেলিনা বেগমের চেয়ারটি। পরে আবার বেলা ২টার সময় গিয়েও তার চেয়ারটি ফাঁকায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দপ্তর সূত্রে জানা যায় তিনি এখনো অফিসেই আসেননি। মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. মুরশিদ আবেদীনের রুমে আছেন তিনি। নিয়মিত অফিস না করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে জনাব সেলিনা বেগম বলেন, এটা আমার অফিসের ব্যাপার। এই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না বলে, ফোন কেটে দেন তিনি।
এর আগে গত ২৮ মে দপ্তরটিতে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। দপ্তরের দুই সহকারী পরিচালকের চেয়ার ফাঁকা ফ্যান লাইট রীতিমতো চলছে। এটা দপ্তরটির বেলা ১২টার চিত্র। জানা যায়, এখনো অফিসে আসেননি দুই সহকারী পরিচালকের একজনও। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সকাল ৯টায় শুরু হলেও দুপুর ১২টায়ও কর্মকর্তারা হাজির হননি অফিসে।
দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সহকারী পরিচালক সেলিনা বেগম অফিসই করেন না। কালেভদ্রে সপ্তাহে একবার অফিসে যা করেন তাও তার নিজের খেয়াল খুশি মতো। অফিসে যেদিন আসেন বেলা ১২টা, ১টা এমনকি বেলা ৩টার সময়ও তিনি অফিসে আসেন। মে মাসের ১৫ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত দপ্তরটির এটেনডেন্স শীটেও স্বাক্ষর নেই তাঁর। এই কর্মকর্তা অফিস ঠিকমতো না করলেও বেতনভাতা পাচ্ছেন ঠিকই নিয়মিত।
জানা যায়, দপ্তরটির আরেক সহকারী পরিচালক মো: নূর ইসলাম কাজ থাকলে অফিসে আসেন। কাজ না থাকলে অফিসে আসেন না তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বছরের পর বছর এভাবেই অফিস না করেই পার পেয়ে যাচ্ছেন সহকারী পরিচালক সেলিনা বেগম। সাম্প্রতিক তিনি পদন্নোতি নিয়ে দপ্তরের উপ-পরিচালক হওয়ার জন্যও আবেদন করেছেন। জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের শক্তিশালী একটি কোরামের সাথে সেলিনার ভালো সম্পর্ক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলেন না। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি।
সহকারী পরিচালক জনাব মো: নূর ইসলাম বলেন, আমি নিয়মিতই অফিস করি। অনেকসময় বাইরে আমাদের দপ্তরের কাজ থাকলে সেই কাজগুলো করতেই বাইরে যেতে হয় আমাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী বলেন, দুই সহকারী পরিচালকের অফিস না করার বিষয়টি তার নজরেও এসেছে। এই বিষয়ে তিনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, দপ্তর থেকে আমাদেরকে বিষয়টি অবগত করা হলে, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।