
আজ, ৮ মে, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব গাধা দিবস। ২০১৮ সালে প্রাণীবিজ্ঞানী আর্ক রাজিকের হাত ধরে যাত্রা শুরু হওয়া এই বিশেষ দিনটি নীরবে মানুষের সেবা করে যাওয়া গাধাদের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতি জানানোর একটি সুযোগ। মরুভূমির প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে রাজিক উপলব্ধি করেন, গাধারা মানবজীবনে অপরিহার্য ভূমিকা রাখলেও প্রায়শই তারা অবহেলা ও যথাযথ মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়। সেই ভাবনা থেকেই প্রতি বছর এই দিনে গাধার গুরুত্ব এবং তাদের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্ব গাধা দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো গাধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই প্রাণীটি কীভাবে অবদান রাখছে তা তুলে ধরা। হাজার বছর ধরে গাধা কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন এবং মানুষের চলাচলে এক বিশ্বস্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আজও দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের জীবনধারণের ক্ষেত্রে গাধা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই পরিশ্রমী প্রাণীদের প্রায়শই অবহেলা ও নিষ্ঠুর আচরণের শিকার হতে হয়। বিশ্ব গাধা দিবস পালনের মাধ্যমে এই অবহেলিত প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ এবং তাদের সঠিক যত্নের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করা সম্ভব।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গাধা রয়েছে চীনে। সেখানে গাধার চামড়ায় থাকা একটি আঠালো পদার্থ ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা হাঁপানি ও অনিদ্রার মতো রোগের উপশমে সহায়ক বলে মনে করা হয়। তবে ওষুধ শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে চীনে গাধার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা একটি উদ্বেগের বিষয়।
গাধা শুধু মানুষের জন্যই উপকারী নয়, গ্রামীণ অঞ্চলের জন্য এটি একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পরিবহন মাধ্যম হিসেবেও পরিচিত। এই দিবসটি কেবল গাধার গুরুত্ব তুলে ধরেই ক্ষান্ত থাকে না, বরং এটি শিশু এবং সাধারণ মানুষকে সকল প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি, যত্ন এবং পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা প্রদানেও সহায়ক।