কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় রাত-দিন ২৪ ঘন্টা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাইকিং করে শব্দ দূষণ চলছে। শব্দ দূষণ মানুষের জন্য ভয়ানক ও বিপদজনক। দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে শব্দ দূষণ বন্ধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও সেই ব্যাপারে কারো কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। হাসপাতাল চত্বর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সড়কে মাইকিংয়ের শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রোগী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। শব্দের যন্ত্রণায় এখন কার কথা কে শোনে?
জানা যায়, শব্দ দূষণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত। এ গুলোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোনো নজরদারি। প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় হাসপাতালে রোগী আনতে মাইকিংয়ের শব্দদূষণের কারণে ভর্তিরত রোগীরা অস্বস্তিতে। শব্দ দূষণে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান ও জটিল অপারেশনের রোগীরা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সড়কগুলোতে এসব মাইকিং চলছে ঘুরে ঘুরে।
বিশেষ করে শুক্রবার ঢাকা থেকে আগত নামি-দামি ডাক্তারদের দেখাতে সারা দিন মাইক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের সড়ক, গ্রামের রাস্তা দিয়ে বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত গাড়ি চলে বিকট শব্দের মাইকিং করে। সরকারি হাসপাতাল, পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করে শব্দ দূষণের ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
এছাড়াও গ্রামের সাধারণ রোগীদের আকৃষ্ট করতে সপ্তাহজুড়ে মাইকিং চলে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর। সাধারণ মানুষের কাছে মাইকের শব্দ দূষণ যন্ত্রণাদায়ক।
এই দূষণের সঙ্গে জড়িত প্রাইভেট হাসপাতালের অসাধু মালিক চক্র। প্রতিনিয়ত মাইকিং শব্দের কারণে হাটবাজার গুলোতে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। শব্দ দূষণের প্রচলিত আইন থাকলেও তারা মানছে না।
শিক্ষার প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষকরা বলেন, প্রতিষ্ঠানে আশেপাশে যখন মাইকিং করা হয় তখন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাইকের আওয়াজে লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয় পড়েন। তারা মনে করেন শব্দ দূষণের কারণে কোমলমতি শিশুদের স্নায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলেন, শব্দ দূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্মরণশক্তি হ্রাস, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি হতে পারে। প্রতিনিয়ত শব্দদূষণে শিশু ও বয়স্করা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব নয়েজ কন্ট্রোলের মতে, শব্দ দূষণের কারণে হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ, মাথাব্যথা বা স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত শব্দের পরিবেশে থাকলে শিশুর জন্মগত ত্রুটি তৈরি হতে পারে।
দেশে শব্দ দূষণের কার ও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, এক মাসের কারাদণ্ড পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। দ্বিতীয়বার কেউ একই অপরাধ করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। শব্দ দূষণ বন্ধের স্পষ্ট আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণে যে যার মতো করে শব্দ দূষণ করে যাচ্ছে। বিষয়টির প্রতি উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে দেশের বিজ্ঞ মহল মনে করেন।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC