
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস ধরে আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন নাসার মহাকাশচারী বুচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস। বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোর ৪টায় (২১.৫৭ জিএমটি) তারা ফ্লোরিডা উপকূলের কাছে সাগরে অবতরণ করেন। খবর বিবিসির।
নাসার ভিডিওতে দেখা যায়, সুনিতা ও বুচকে পৃথিবীতে নিয়ে আসা স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানের ক্যাপসুল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে দ্রুত এবং অগ্নিময় পুনঃপ্রবেশের পর ফ্লোরিডার উপকূলের কাছে আছড়ে পড়ার আগে চারটি প্যারাসুট খুলে যায়। এতে স্পেসএক্স ক্যাপসুলটি ফ্লোরিডার সাগরে মৃদু গতিতে নেমে আসে। এ সময় ডলফিনের একটি দলকে তাদের কাছাকাছি বিচরণ করতে দেখা যায়।
একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ক্যাপসুলটিকে পানি থেকে তুলে নেওয়ার পর মহাকাশচারী সুনিতা ও বুচ এবং তাদের সহকর্মী ক্রু সদস্য নিক হেগ ও আলেকজান্ডার গর্বুনভকে হ্যাচ থেকে বের করে আনা হয়।
নাসার বাণিজ্যিক ক্রু প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক স্টিভ স্টিচ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ক্রুরা দুর্দান্ত কাজ করেছেন। মাত্র আট দিনের জন্য থাকা একটি মিশনের ২৮৮ দিন কাটিয়ে সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। বাড়ি ফেরার যাত্রায় ১৭ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
মার্কিন মহাকাশচারী সুনিতা ও বুচ উইলমোর ২০২৪ সালের ৫ জুন বোয়িং স্টারলাইনার ক্যালিপসো মহাকাশযানে চড়ে মহাকাশে গিয়েছিলেন। ওই মহাকাশযানটিতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেওয়ায় এবং সেটিতে মহাকাশচারীদের বাড়ি ফিরিয়ে আনা খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সেজন্য সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে স্টারলাইনারটিকে খালি ফিরিয়ে আনে নাসা।
সুনিতা-বুচ জুটির প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি নতুন যাত্রার প্রয়োজন হয় নাসার। তাই নাসা পরবর্তী নির্ধারিত ফ্লাইট বেছে নেয়: সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আইএসএসে পৌঁছায় একটি স্পেসএক্স ক্যাপসুল ।
স্পেসএক্স ক্যাপসুলে চারজনের পরিবর্তে দুইজন মহাকাশচারী গিয়েছিলেন, তারা বুচ ও সুনিতার ফিরে আসার জন্য দুটি আসন ফাঁকা রেখেছিলেন। কিন্তু তাদের মিশন ছিল ছয়মাসের। আর সেজন্যেই সুনিতাদেরও মহাকাশে কাটাতে হয়েছে অতিরিক্ত সময়।
সুনিতা ও বুচ জুটি এতদিন কক্ষপথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন এবং স্পেসওয়াক পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে সুনিতা মহাকাশ স্টেশনের বাইরে সবচেয়ে বেশি ঘণ্টা কাটানো নারীর রেকর্ড ভেঙেছেন। গত ক্রিসমাসে তারা সান্তা টুপি ও রেইনডিয়ার শিং পরে বড়দিনের জন্য একটি উৎসবের বার্তা পাঠিয়েছিলেন পৃথিবীতে।