
গাজীপুর মহানগরীর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে দুষ্কৃতকারীদের হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ৫৪ জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা সকলেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হাসনাত আব্দুল্লাহর মাইক্রোবাসে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র ও পাথর ব্যবহার করে গাড়িতে আঘাত করে। এতে গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায় এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর হাতের কনুইতে আঘাত লাগে। হামলার পর সন্ত্রাসীরা তার গাড়ির পিছু ধাওয়া করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসনাত আব্দুল্লাহ বোর্ডবাজার এলাকায় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি)-এর ভেতরে আশ্রয় নেন।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আইইউটির ছাত্ররা দ্রুত ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরবর্তীতে হাসনাত আব্দুল্লাহ নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছান। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই এনসিপির নেতাকর্মীরা চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিল বের করেন এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রবিউল হাসান আজ সোমবার সকালে গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলার পরপরই দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল মাঠে নামে এবং রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ৫৪ জনকে আটক করা হয়।
এদিকে, মহানগরীর বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন খান জানান, হাসনাত আব্দুল্লাহ সালনার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে একটি অনুষ্ঠান শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন। পথে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা চান্দনা চৌরাস্তা পার হওয়ার সময় তার গাড়িকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম তার ফেসবুক আইডিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন, হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন।’
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার মূল কারণ ও জড়িত অন্যান্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।