
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে-(কুবি) জুলাইয়ের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালনকালে কুবি শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
১১ জুলাই (শুক্রবার) প্রক্টর বরাবর দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাসান কামরুল (মো. কামরুল হাসান) একাধিকবার অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে ফুল দেওয়ার বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন। প্রতিবারই তিনি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। একপর্যায়ে মোতাসিম বিল্লাহ নিজেই বিষয়টি উপ-উপাচার্যকে জানালে তিনি বলেন, ‘সময় স্বল্পতার কারণে মঞ্চে নয়, গেটে ফুল দেওয়া যেতে পারে।’
এই বার্তা হাসান কামরুলকে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং জোরে হুংকার দিয়ে বলেন ‘উপ-উপাচার্যের খবর আছে।’ মোতাসিম বিল্লাহ তাকে শান্ত করতে চাইলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে ইশারা করে ও চোখ রাঙিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। ঘটনাটি উপস্থিত শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, অতিথি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই ঘটে।
সহকারী অধ্যাপক মোতাসিম বিল্লাহর ভাষ্যমতে, ‘হাসান কামরুল ইচ্ছাকৃতভাবে অনুষ্ঠানটি বানচাল করতে এসেছিলেন এবং তিনি আগের রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘এ ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সাফল্য, ব্যর্থতা বা দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তিনি বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা, নেতিবাচকতা ও প্রশাসনের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি করার চেষ্টাও করছেন।’
এবিষয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চীফ রিপোর্টার মানিকুল আজাদ বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো। এরপর যদি সত্যতা পাই তাহলে ব্যবস্থা নিব। সে যে কাজটা করেছে এটা বাসস’র নীতিমালা বিরোধী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, কামরুল অতীতেও একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন এবং তদবির করেছেন। তার দাবিগুলো অগ্রাহ্য হলে তিনি প্রশাসনের প্রতি সবসময়ই বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল মঈন এবং বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলীর সময়েও তার এমন আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া কখনো নিজেকে আওয়ামী লীগপন্থি, আবার কখনো বিএনপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সঙ্গে তার একটি জন্মদিনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়।
তবে বর্তমানে কুবি ছাত্রদলের সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ’র সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে।