জুলাই ২, ২০২৫

বুধবার ২ জুলাই, ২০২৫

মুরাদনগরে আলোচিত ঘটনায় নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা ৫ দিনেও হয়নি

ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা গত পাঁচ দিনেও সম্পন্ন হয়নি। গত শুক্রবার (২৭ জুন) তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হলেও ভুক্তভোগী নিজেই মত পরিবর্তন করায় পরীক্ষাটি করানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে এবং শুক্রবার দুপুরে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরপরই পুলিশ ওই নারীকে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ফজর আলীকে যে মাত্রায় নির্যাতন করা হয়েছে, তাতে তিনি মারা যেতে পারেন বলে ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারকে ভয় দেখানো হয়। এই ভীতির কারণেই তিনি ডাক্তারি পরীক্ষা না করানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং মামলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও অনীহা প্রকাশ করেন। তবে ওই আত্মীয় আরও জানান, পুলিশ চাইলে ভুক্তভোগী নারী এখনও ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজি আছেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমীন সুলতানা জানান, আইনেই বলা আছে যে ভুক্তভোগী নারী যদি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে না চান, তবে তা জোর করে করানো যাবে না। জোরপূর্বক ডাক্তারি পরীক্ষা আইনের বিধানের পরিপন্থী।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেছেন, তারা ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও জানান, যদি ওই নারী এখন রাজি হন, তাহলে পরীক্ষা করানো হবে।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) কুমিল্লার অ্যাডভোকেট শামীমা জাহান এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়ে শুক্রবারই পরীক্ষা করানো জরুরি ছিল। তিনি মনে করেন, এখন দেরি হলেও ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাসহ তার পরিধেয় বস্ত্রের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা অত্যন্ত প্রয়োজন। অন্যথায়, মামলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ত্রুটি থেকে যাবে। শরীরে আলামত থাকা অবস্থায় ডাক্তারি পরীক্ষা করানো গেলে আরও ভালো ফল পাওয়া যেত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ওই নারীকে মানসিক ট্রমা থেকে বের করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আশ্বস্ত করেন যে নির্যাতন ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বর্তমানে তারা ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন